বহরমপুরে কর্মীদের সঙ্গে অধীর চৌধুরীর অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার ৪ বিধায়ক-সহ দলীয় কর্মীদের মারধর করার প্রতিবাদে অনশন-অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ তিনি মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে অনশন-অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন। সন্ধে পর্যন্ত তা চলে। তাঁর সঙ্গে ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বসেছিলেন প্রহৃত চার বিধায়ক— বিধানসভায় বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও নওদার বিধায়ক আবু তাহের খান, রানিনগরের বিধায়ক, ফিরোজা বেগম ও বেলডাঙার বিধায়ক সফিউজ্জামান।
তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমুল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে আসা প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী হুমায়ুন কবীর। অধীর বলেন, ‘‘রাজ্যে স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে এ দিন ৮ ঘণ্টার অনশনে বসে ছিলাম। এর পর আগামী ১৬ এপ্রিল কলকাতায় গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ফের অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলায় জেলাপরিষদের আসন সংখ্যা ৭০টি, ২৬টি পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ৭৩৬টি এবং ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ৪১৭১টি। তার মধ্যে শাসক দল ছাড়া বিরোধীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি জেলাপরিষদের ১৫টি আসনে, পঞ্চায়েত সমিতির ৩২৬টি আসনে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮৯৬টি আসনে।
বিধানসভায় বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক, তথা বহরমপুরের কংগ্রসের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল এখন বিরোধী দলের যাঁরা লড়াই সংগ্রাম করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছেন, তাঁদের চাপ দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর সন্ত্রাসে নেমেছে। এই সবের বিরোধিতা করায় সারা জেলা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে পুলিশ, প্রশাসন ও তৃণমূলের যৌথ বাহিনী।’’
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘আসলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে অভিভূত হয়ে মানুষ বিরোধীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই ওরা লোক না পেয়ে এখন নাটক করছে।’’
হুমায়ুন বলেন, ‘‘তৃণমূলের উন্নয়ন মানে তো লাঠি-বোমা হাতে গুণ্ডা বাহিনী।’’ তাঁর শাসানি, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন ও তৃণমূলের যৌথ বাহিনী গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে না আনলে আমরাও বাধ্য হব আমাদের বাহিনী নিয়ে প্রতিরোধের মাঠে নামতে।’’