মান্নান হোসেনের বাড়িতে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
বহরমপুর: তাঁর ‘মান্নানদা’ আর নেই, শুনেই কলকাতার নার্সিংহোমেই ছুটে গিয়েছিলেন, কিন্ত ততক্ষণে পরিবারের লোকজন মরদেহ নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন বহরমপুরে। বুধবার রাতে তাই সটান মান্নান হোসেনের বহরমপুরের বাড়িতেই তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বলছেন, ‘‘দল বদলে ফেলেছিলেন, হয়ত কিছু ভুল বোঝাবুঝিও হয়েছিল, তা বলে মান্নানদার পরিবারের সঙ্গে দেখা করব না, হয় নাকি, মান্নানদার পরিবারের লোকজন তো আমার নিকটজন!’’
২০০৩ সালে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদ দখল করেছিল কংগ্রেস। সে সময় জেলাপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন মান্নানের স্ত্রী বুলবুল দাস। মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তখন অধীর। মূলত তাঁর নেতৃত্বেই বাম জামানায় কংগ্রেস একক শক্তিতে সেই প্রথম একটি জেলাপরিষদ দখল করে। বুধবার রাতে অধীর তাই বুলবুলকে বলেন, ‘‘সে বার আপনাকে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি করতে চেয়েছিলেন মান্নানদা। আমি পারিনি। সেই অনুরোধ কেন পারিনি, সে সব বিষয়ও মান্নানদাকে বুঝিয়ে বলেছিলাম। তবে সে বার সভাধিপতি করতে না পারলেও, আপনাকে জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ করেছিলাম, মনে আছে আপনার।’’
গত ৪ অক্টোবর কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে মান্নান হোসেনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। সেই হাসপাতালেই মঙ্গলবার বিকালে মারা যান মান্নান। সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও বুলবুল দাসের সামনে অধীর চৌধুরী সংশয় প্রকাশ করেন, ‘‘এই রকম অপারেশনের জন্য কেন যে কলকাতাকে বেছে নেওয়া হল! মান্নানদা প্রাক্তন সাংসদ। ফলে দিব্ব্যি দিল্লির এইমস যেতে পারতেন। চাইলে সিঙ্গাপুরে যেতে পারতেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বিদেশ থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করে এসে এখন দিব্ব্যি সুস্থ আছেন।’’ বুলবুলের কাছে অধীরের আর্জি, কখনও কোনও প্রয়োজন পড়লে নির্দ্বিধায় যেন তাঁকে জানানো হয়।
এ দিন, তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা মুখপাত্র অশোক দাস জানান, ২ ডিসেম্বর দুপুরে বহরমপুর স্টেডিয়ামে মান্নান হোসেনের স্মরণসভার আয়োজন করবে দল।’’