'মান্নানদা ভুল  বুঝবেন না'

ভোটে হার-জিত আছে। সে কথা তাঁকে বোঝাতে পারিনি। আমার আক্ষেপ, সেই অভিমান নিয়ে তিনি বিদায় নিলেন। সেই আক্ষেপটা আজও রয়ে গেল। মান্নানদা যেখানেই থাকুন ভুল বুঝবেন না।

Advertisement

অধীররঞ্জন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪১
Share:

তখন কংগ্রেসে। —ফাইল চিত্র

তাঁর দল তৃণমূল এখন রাজ্যের শাসন ক্ষমতায়। আর আমি, রাজ্যের শিল্পায়নের জন্য এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাস্তায় মিছিলে হাঁটছি। খবরটা এল সেই সময়। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। তাই আবার হয় নাকি!

Advertisement

বছর তিনেক ধরে তাঁর সঙ্গে আমার রাজনীতিগত এবং আদর্শগত বিরোধ তৈরি হয়েছে ঠিকই, তা বলে মান্নানদার সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধ, ভাবতেই পারি না। আমি আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মনে পড়ে এই কংগ্রেস দলে যাঁদের হাত ধরে আমার প্রবেশ, তাঁদের মধ্যে জ্বল জ্বল করছে ওই মুখটা। তাঁকে নিয়ে আজ কত কথা, কত স্মৃতি। ১৯৯১ সালে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একই দিনে, ২০’মে। মান্নানদা সে বার জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী। আমি প্রথমবার ভোটে দাঁড়ালাম। ওই লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে নবগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ‘হাত’ প্রতীকের কংগ্রেস প্রার্থী।

বুথ বেদখল হয়েছে শুনে মান্নানদা আর আমি দু’জনে এক সঙ্গে ছুটলাম বাঘিরাপাড়া বুথে। তখনকার শাসক দলের দুষ্কৃতীরা আমাদের বুথের মধ্যে ঢুকিয়ে আগুন ধরিয়ে দিল। সে দিন আমাদের দু’জনেরই পুনর্জন্ম হয়েছিল।

Advertisement

২০০১ সালে কংগ্রেস আর তৃণমূল জোট, প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দলের ‘নলকূপ’ প্রতীকে মুর্শিদাবাদ বিধানসভার প্রার্থী মান্নানদা। আমি নিজেই জেলা কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে তাঁর হয়ে প্রচার করেছি। সেখানে তাঁকে জেতাতে না পারলেও পরের বার ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে পর পর দু’বার মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে মানুষের রায়ে তাঁকে সাংসদ নির্বাচিত করতে পেরেছি। সেই সময়ের জেলা কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে কী ভাল যে লেগেছিল। কিন্তু পরের বার, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে জেতাতে পারিনি। বুকে হাত দিয়ে বলছি, খুব খারাপ লেগেছিল সে দিন।

ভোটে হার-জিত আছে। সে কথা তাঁকে বোঝাতে পারিনি। আমার আক্ষেপ, সেই অভিমান নিয়ে তিনি বিদায় নিলেন। সেই আক্ষেপটা আজও রয়ে গেল। মান্নানদা যেখানেই থাকুন ভুল বুঝবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement