অনলাইন লটারি বন্ধ করার দাবি

মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শহর থেকে বেআইনি সমস্ত লোটো তথা অনলাইন লটারি ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল ধুলিয়ান পুরসভা। ‘এই ব্যবসা সম্পূর্ণ বেআইনি’— বৃহস্পতিবার রীতিমতো মাইকিং করে পুর কর্তৃপক্ষ এই মর্মে শহরে প্রচারও করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:০৫
Share:

মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শহর থেকে বেআইনি সমস্ত লোটো তথা অনলাইন লটারি ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল ধুলিয়ান পুরসভা। ‘এই ব্যবসা সম্পূর্ণ বেআইনি’— বৃহস্পতিবার রীতিমতো মাইকিং করে পুর কর্তৃপক্ষ এই মর্মে শহরে প্রচারও করেছে।

Advertisement

প্রায় মাস দেড়েক ধরে ধুলিয়ান শহর জুড়ে দু’শোরও বেশি অনলাইন লটারির দোকান চলছে রমরমিয়ে। এর বিরুদ্ধে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে শ’দুয়েক মহিলা এ দিন দুপুরে ধুলিয়ান পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারী মহিলাদের অভিযোগ, অনলাইন লটারি ব্যবসার ফলে বহু পরিবার সর্বস্বান্ত হচ্ছে। বাড়িতে অশান্তি বাড়ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা লুটে নিচ্ছে লোটোর কারবারিরা। তাঁদের অভিযোগ, শহর জুড়ে বেআইনি লোটোর ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি বানেরা বিবি বলেন, ‘‘শহরের জায়গায় জায়গায় দু’তিনটি করে কম্পিউটার নিয়ে এই ব্যবসা চালাচ্ছে কিছু লোক। সবটাই বেআইনি। এদের পাল্লায় পড়ছে বহু লোক। ওই পরিবারগুলির মহিলারা আমাদের কাছে অভিযোগ করছেন। তাই বাধ্য হয়েই শহরের মহিলাদের নিয়ে পুরসভার কাছে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’ সংগঠনের তরফে হুঁশিয়ারি, দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মহিলারাই ওই সব দোকান ভাঙতে শুরু করবেন।

অনলাইন লটারির কুপ্রভাব কেমন ভাবে প্রভাব পড়ছে সংসারে? রেশমি বিবির (নাম পরিবর্তিত) পাঁচ ছেলেমেয়ে। সকলেই সবাই নাবালক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিড়ি বাঁধি। স্বামী দিনমজুর। ৫৫০ টাকা জমিয়ে স্বামীর হাতে দিয়েছিলাম ইদের সময় ছেলেমেয়েদের জামা কেনার জন্যে। সকালে বেরিয়ে স্বামী যখন বাড়ি ফিরল সন্ধ্যে গড়িয়েছে। দেখি হাত খালি। বলল, আরও কিছু টাকা জেতার লোভে লটারি খেলতে গিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছে!’’ মেয়ের বই কেনার টাকায় লটারি খেলে হেরে ফেরার উদারণরও রয়েছে শহরে।

Advertisement

অভিযোগ, লোক ঠকানো ব্যবসায় বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। পুরপ্রধান তৃণমূলের সুবল সাহার কথায়, ‘‘বিক্ষোভকারী মহিলারা সকলেই গরীব ঘরের। তাঁদের মুখে অনলাইন লটারিতে কী ভাবে পরিবারে অশান্তি শুরু হয়েছে, তা শুনে অবাক হয়েছি। সামশেরগঞ্জ থানার ওসিকে জানিয়ে এ দিন বিকেলেই পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করে সে সব বন্ধ করতে বলেছি।’’ পুলিশ ও পুরসভা যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে ব্যবসা বন্ধ করা হবে বলে তিনি জানান।

প্রতিশ্রুতি তো মিলল, কাজের কাজ না হলে দোকান ভাঙার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পদাধিকারীরা। সংস্থার সম্পাদিকা ঝুমু বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’দিন দেখব। কাজ না হলে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে আমরাই অনলাইন লটারি ব্যবসা বন্ধ করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement