উঠছে দূষণের অভিযোগ

গম পোড়াচ্ছে কৃষি দফতরই

বাজি আর নাড়া পোড়ানোর ধোঁয়ায় দীপাবলির সময়ে ধোঁয়াশায় ঢেকে গিয়েছিল দিল্লির আকাশ। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে গত নভেম্বরে ধান এবং গমের নাড়া পোড়াতে নিষেধ করে চাষিদের কাছে লিফলেট বিলি করেছিল কৃষি দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০১:১৫
Share:

বাজি আর নাড়া পোড়ানোর ধোঁয়ায় দীপাবলির সময়ে ধোঁয়াশায় ঢেকে গিয়েছিল দিল্লির আকাশ।

Advertisement

ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে গত নভেম্বরে ধান এবং গমের নাড়া পোড়াতে নিষেধ করে চাষিদের কাছে লিফলেট বিলি করেছিল কৃষি দফতর। কিন্তু নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের সেই কৃষি দফতরই উদ্যোগী হয়ে বিঘের পর বিঘে গম পুড়িয়ে দিচ্ছে। তার জেরে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।

নদিয়া জেলায় প্রায় ৫০০হেক্টর গমে ধসা রোগ লেগেছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ হেক্টর জমির গম কেটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৫০৯ হেক্টর জমিতে ধসা রোগ লেগেছিল। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ৫০৯ হেক্টর আক্রান্ত জমির গম কেটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কি বলছে কৃষি দফতর?

নদিয়া জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, রোগাক্রান্ত গম পুড়িয়ে না ফেললে বিঘের পর বিঘে গম মারণ রোগে আক্রান্ত হবে। তাই দূষণের থেকেও এই রোগ আটকানো আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই গম পোড়ানো হচ্ছে।

আগে গম বা ধানের নাড়া না পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এ বারে এই রোগাক্রান্ত গাছ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায় না? জেলা কৃষিদ ফতরের এক আধিকারিকের মতে, রোগাক্রান্ত গম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যাবে না। ফাঁকা জায়গায় মাটি খুঁড়ে অনেক নীচে পুঁতে দেওয়া যেতে পারে। নদিয়ার কিছু কিছু জায়গায় আক্রান্ত গম গাছ মাটির তলায় পুঁতে দেওয়াও হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মুর্শিদাবাদ জেলা কৃষিদফতরের এক আধিকারিকের দাবি, দূষণের থেকেও মারাত্মক এই রোগ। তাই এই রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেটাই তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। গম পোড়ানো নিয়ে ইসলামপুর থানা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শুক্রবার এক দফা খণ্ডযুদ্ধ বাধে চাষিদের। এমনকি পরিস্থিতি সামল দিতে পাঁচ চাষিকে আটকও করতে হয় পুলিশকে। তাঁদের কিছু না জানিয়ে গম পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযগ উঠেছে।

গত বছর নভেম্বরে দুই জেলার কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, ধান এবং গমের নাড়া পুড়িয়ে দিলে প্রচুর পরিমাণ উদ্ভিদের খাদ্য উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি কাজে জমির উপরিভাগের ছ’ইঞ্চি মাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নাড়া পোড়ানোর ফলে ওই মাটির গঠন ক্ষতিগ্রস্ত
হয়। মাটির জলধারণ ক্ষমতা
কমে যায়। মাটিতে থাকা উপকারী জীবাণুও নষ্ট হয়ে যায়। তা ছাড়াও ধান বা গমের নাড়া পোড়ানোর ফলে এলাকায় প্রচুর দূষণ হয়। মাঠের ভেতর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারেরও ক্ষতি হতে পা্রে।

এ বারে বিঘের পর বিঘের জমির গম পুড়িয়ে ফেলার সময়ে কি একই রকম সমস্যা দেখা দেবে না? এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি নদিয়ার উপ-কৃষি আধিকারিক (প্রশাসন) বুদ্ধদেব ধর বা মুর্শিদাবাদের উপ-কৃষি আধিকারিক (প্রশাসন) তাপস কুণ্ডু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন