রাস্তায় পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক বৃদ্ধা মহিলা। ডান পায়ে পচন ধরেছে। ভনভন করছে মাছি। খবর যায় পুলিশে। তারা গিয়ে বৃদ্ধাকে ধরাধরি করে তুলে নিয়ে যায় বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে।
কিন্তু সেই থেকে বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালের একটি বাথরুমের পাশের বেডে পড়ে রয়েছেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা। নিরুত্তাপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত খবর জানাজানি হতেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বৃদ্ধাকে। বর্তমানে তিনি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাকাশিপাড়ার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বানগড়িয়ায় এলাকায় রাস্তার ধারে পড়েছিলেন বছর পঁয়ষট্টির মহিলা। ডান পায়ে পচন ধরে পোকা হয়ে গিয়েছে। তা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। খবর পেয়ে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার পর থেকে ওই মহিলার কোনও চিকিৎসাই হয়নি। এ দিকে, পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বেথুয়াডহরির হাসপাতালে মহিলাকে নিতে আসেন নাকাশিপাড়ারই একটি বেসরকারি হোম কর্তৃপক্ষ। তারা এসে দেখেন, বিনা চিকিৎসায় বাথরুমের পাশে একটি বেডে ফেলে রাখা হয়েছে। তাঁরা তখন ওই অবস্থায় মহিলাকে হোমে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন। খবর দেন পুলিশকে।
এর পরই ছুটে আসে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে ওই মহিলাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিএমওএইচ সজল বিশ্বাস বলেন, “এ অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। আবার পায়ে মারাত্মক পচন ধরেছে। পোকা হয়ে গিয়েছে। আমাদের হাসপাতালে ওই রোগীর চিকিৎসা করার মতো পরিকাঠামো নেই। তাই তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
নাকাশিপাড়ার ওই হোমের পরিচালন সমিতির সম্পাদক মোসলেম মুন্সির কথায়, “পুরোটা না হলেও প্রাথমিক চিকিৎসা তো করতে পারতো বেথুয়াডহরি হাসপাতাল। সেটাও তো করেনি। আমরা গিয়ে দেখছি বাথরুমের পাশে একটা বেডের উপরে ফেলে রাখা হয়েছে। পায়ে মৌচাকের মত থিকথিক করছে পোকা।”
যদিও এই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন সজলবাবু। তিনি বলেন, “যারা এটা বলছেন, তাঁরা ডাক্তারির কিছুই জানেন না। আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা করেছি।”