জার্সি শুকোচ্ছে ছাদে, হতাশ বহরমপুর

জার্সি ব্যবসায়ী শুভঙ্কর সরকার জানাচ্ছেন, তিনি বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে কলকাতার বড়বাজার থেকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি কিনে এনেছিলেন। কিন্তু এখন ওই দু’টো দল বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় তাঁকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

বিদায়-বিশ্বকাপ: শনিবার বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় থেমে গিয়েছে আর্জেন্টিনার দৌড়। কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছে ব্রাজিলও। আর তাতেই মাথায় হাত জার্সি ব্যবসায়ীদের!

Advertisement

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বিক্রির আশায় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল দলের জার্সি মজুত করেছিলেন বহরমপুরের ব্যবসায়ীরা। ১০ জুন থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচে মেসি পেনাল্টি মিস করায় কোথাও কি অশনি সঙ্কেত লুকিয়ে ছিল? তখনই কি মেসি সমর্থকদের বুক কেঁপে উঠেছিল? মেসি-নির্ভর আর্জেন্টিনার নড়বড়ে খেলা দেখে প্রমাদ গুনছিলেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত তাঁদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল!

জার্সি ব্যবসায়ী শুভঙ্কর সরকার জানাচ্ছেন, তিনি বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে কলকাতার বড়বাজার থেকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি কিনে এনেছিলেন। কিন্তু এখন ওই দু’টো দল বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় তাঁকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। শুভঙ্কর বলছেন, ‘‘আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পাশাপাশি পর্তুগাল ও জার্মানি দলের জার্সি কিনেও চরম বিপাকে পড়েছি। চারটে দল-ই তো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল। এখন জার্সিগুলো দোকান থেকে নামিয়ে বস্তাবন্দি করে রেখে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’

Advertisement

বহরমপুরের বিভিন্ন খেলার উপকরণ বিক্রির দোকানে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের হাফ-হাতা জার্সি একশো টাকা করে এবং ফুল-হাতা জার্সি একশো পঁচিশ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। অন্য দলের জার্সি তেমন কাটেনি। এ দিকে আর্জেন্টিনা বিদায় নেওয়ার পরে বিশ্বকাপ খেলা চলাকালীন রাতারাতি যাঁরা নীল-সাদা রঙের জার্সি বদল করে ব্রাজিলের জার্সি পরেছিলেন, শুক্রবার রাত তাঁদের কাছেও হতাশার! ব্রাজিল বনাম বেলজিয়ামের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে প্রায় ডজন-খানেক ব্রাজিল দলের হলুদ-সবুজ জার্সি কিনে বন্ধুদের মধ্যে বিলি করেন ব্রাজিল-সমর্থক বহরমপুরের হোটেল ব্যবসায়ী চন্দন সরকার। চন্দন বলেন, ‘‘ব্রাজিল ফাইনালে উঠলে আরও বন্ধুদের জার্সি দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। এখন জার্সি কেচে দেরাজে তুলে রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তা অর্ঘ্য দাস জানান, তিনি পর্তুগালের সমর্থক। কিন্তু পর্তুগালের জার্সি কেনার চেষ্টা করেও তিনি পাননি। কারণ বহরমপুরের বিভিন্ন দোকানে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি ছাড়া অন্য দেশের জার্সি খোঁজ করেও তিনি পাননি। ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘বাকি দেশের জার্সির খুব একটা চাহিদা নেই বলে বিক্রি হয় না। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে অনামী দেশের জার্সি নিয়ে এলে বিক্রি হত। পরের বার থেকে এই ভুল আর করা যাবে না।’’

জার্সির পাশাপাশি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল দলের ফুটবলারদের মুখ দিয়ে ফ্লেক্স বানানোর বরাত পেয়েছিলেন ব্যবসায়ী চির়ঞ্জিত কর্মকার। তাঁর কথায়, ‘‘যে ক্লাব বরাত দিয়েছিল, তাঁদের একে-একে অগ্রিম টাকা ফেরত দিতে হয়েছে। তাতে ক্ষতির মুখে তো পড়লাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন