আদি বাড়ি শান্তিপুরের নৃসিংহপুর নতুনগ্রামে। জিরাটের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করি। সম্প্রতি বর্ধমানের কালনায় একটি বাড়ি করেছি। শনিবার রাতে কালনার বাড়ি যাচ্ছিলাম। সঙ্গে স্ত্রী কাকলি এবং দুই মেয়ে অস্মিতা ও অঙ্কিতা। রাত ১০টা নাগাদ নৃসিংহপুর ফেরিঘাটে আসি। তখনও বুঝতে পারিনি, সামনে কী অপেক্ষা করে আছে।
রাত ১০টায় ভেসেল রওনা দেয় কালনা ঘাটের দিকে। ভেসেলে আমার পরিবার ছাড়া আরও জনা সাতেক যাত্রী ছিলেন। ছিল দুটি লরি, একটি চার চাকার গাড়ি। মিনিট দশেকের পথ। হঠাৎ একটা শব্দ করে ভেসেল থেমে গেল। আমরা মাঝ নদীতে।
এরপর ভেসেলটি পিছোতে শুরু করল। প্রথমে ভেবেছিলাম চালক হয়তো কোনও কারণে দিক পরিবর্তন করছেন। কিন্তু ভেসেলটি ঘুরতে শুরু করলে ভুল ভাঙে। এক সময়ে সেটির মুখ ঘুরে যায় গুপ্তিপাড়া ঘাটের দিকে। সামনে অন্ধকার নদী। আমরা তখন এক প্রকার দিশেহারা। মেরুদণ্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নামতে শুরু করেছে।
ঠিক কী হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করলাম। চালক জানালেন, নদীর স্রোতে ভেসে আসা কচুরিপানায় আটকে গিয়েছে প্রপেলার। তার থেকেই বিপত্তি। অন্য যাত্রীরা ততক্ষণে আতঙ্কিত হয়ে পরিচিতদের ফোন করতে শুরু করেছেন। আমিও নৃসিংহপুরে আমার পরিচিত লোকজনকে ফোন করতে থাকি। ঘড়িতে দেখলাম, সাড়ে ১২টা বাজে। দুই মেয়ে ভয়ে কাঁদতে শুরু করেছে।
এর মধ্যে জানতে পারলাম, শান্তিপুর থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। রাত ১টা নাগাদ একটি নৌকা নিয়ে এলেন শান্তিপুর থানার পুলিশকর্মীরা।