ভোটার তালিকা। — প্রতীকী চিত্র।
বিতর্কের মাঝে বাতিল হল নদিয়ার শান্তিপুরের বিডিও-র ডাকা সর্বদল বৈঠক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বুধবার একটি সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ। বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল বুথস্তরের এজেন্ট তালিকা চাওয়া। পাশাপাশি মৃত এবং অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারদের শনাক্তকরণের কথাও উল্লেখ ছিল বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা অভিযোগ ছিল, ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত ভাবে’ ওই বৈঠক ডেকেছেন বিডিও। তা নিয়ে বিতর্কের আবহে সর্বদল বৈঠক বাতিল করে দিলেন বিডিও। এই মর্মে সব দলকে নতুন করে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। চিঠির বয়ান অনুসারে, ‘অনিবার্য পরিস্থিতি’র কারণে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকটি বাতিল করা হয়েছে।
শান্তিপুরের বিডিও অফিস সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সংক্রান্ত আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য সর্বদল বৈঠকটি বাতিল করা হয়েছে। সর্বদল বৈঠক বাতিলের কথা সব পক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে এই বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি চিঠিতে। সর্বদল বৈঠক বাতিলের প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কমকে বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, “আজকের বৈঠক হচ্ছে না। নোটিস দিয়ে তা জানানো হয়েছে। তবে অন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।”
সর্বদল বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি নদিয়ার শান্তিপুরের বিডিওর। —নিজস্ব চিত্র।
শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, এই ধরনের বৈঠকের জন্য কমিশনের অনুমতির প্রয়োজন হয়। বিডিও এমন কোনও অনুমতি ছাড়াই বৈঠক ডেকেছেন। যদিও শান্তিপুরের বিডিও তখন জানিয়েছিলেন, এই বৈঠকটি একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। এর জন্য কমিশনের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। পরে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে জানা যায়, বিডিও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই ওই বৈঠক ডেকেছেন। কমিশনের তরফে তাঁকে এমন কোনও বৈঠক ডাকতে বলা হয়নি। সিইও দফতর সূত্রে খবর, নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠক ডাকতে পারেন বিডিও। কিন্তু কমিশনের সম্মতি ছাড়া বৈঠকের আলোচ্য বিষয় স্থির করতে পারেন না তিনি। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দিল্লির দফতরেও জানিয়েছে সিইওর দফতর।
এই বিতর্কের মাঝে মঙ্গলবার জানা যায়, দেশের সব মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-সহ নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলির সমস্যার কথা শুনতে বলা হয়েছে তাঁদের। সেই সমস্যা শুনে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে বলেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার।
বুধবার শান্তিপুরের বিডিও জানান, এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও জায়গা থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাননি। তবে দুই-এক জায়গা থেকে মৌখিক ভাবে তাঁর থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। বৈঠকের জন্য প্রশাসনিক স্তরে তাঁর কাছে নির্দেশ ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় সন্দীপকে। তাঁর জবাব, “যা হয়েছে, নির্দেশে হয়েছে। ভবিষ্যতে নির্দেশ পেলে আবার বৈঠক হবে।” তবে কোন স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট কোনও উত্তর দেননি।