মুসলিম মহিলা মণ্ডল সভাপতি

তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর আবেগে ভেসে বলেন, “এর থেকে প্রমাণ হয়ে গেল যে, নিজেকে উজাড় করে দলটা করলে তার উপযুক্ত মূল্যায়ন হবেই।”

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪১
Share:

বেবিনা খাতুন, সদ্য নির্বাচিত ১৮ মণ্ডল সভাপতি। নিজস্ব চিত্র

জেলায় এক সংখ্যালঘু মহিলাকে দলের নেতৃত্বে তুলে আনল বিজেপি। চাপড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম তালুকহুদার বাসিন্দা বছর সাঁইত্রিশের বেবিনা খাতুন পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। সংখ্যালঘু প্রধান গ্রামে অনেক বিদ্রুপ, কটাক্ষ সহ্য করে গত ১০ বছর ধরে তিনি বিজেপিতে রয়েছেন ও সক্রিয় ভাবে দল করছেন।

Advertisement

২০১৩ সালে তিনি বিজেপি থেকে জেলা পরিষদ প্রার্থী হন। এ বার দেবেশ ঘোষকে সরিয়ে তাকে ১৮ মণ্ডলের সভাপতি পদে বসানো হয়েছে। এতটা তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি। তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর আবেগে ভেসে বলেন, “এর থেকে প্রমাণ হয়ে গেল যে, নিজেকে উজাড় করে দলটা করলে তার উপযুক্ত মূল্যায়ন হবেই।”

বেবিনাকে নির্বাচন করার পিছনে দু’টি কারণ দেখতে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। প্রথমত, জেলায় মুসলিম মন পাওয়ার চেষ্টা। বিশেষ করে দেখা যাচ্ছে নদিয়ার উত্তর অংশে চাপড়া, কালীগঞ্জ, করিমপুর, পলাশিপাড়া, নাকাশিপড়া বিধানসভার মতো এলাকায় সংখ্যালঘুরাই জয়-পরাজয় ঠিক করে দিচ্ছেন। বিজেপি এই বিষয়টা মাথায় রাখছে।

Advertisement

দ্বিতীয়ত অনেকে বলছেন, বেবিনা খাতুন মহাদেব সরকারের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত। জেলা সভাপতি নির্বাচনের আগে মহাদেব সরকারের হাত শক্ত করতেই অন্য অনেকের মত বেবিনাকেও মণ্ডল সভাপতি করা হল। যদিও মহাদেব সরকারের দাবি, “মণ্ডল সভাপতি মনোনিত করেন রাজ্য নেতৃত্ব। এখানে আমাদের ভূমিকা নেই”। বৃহস্পতিবার মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেন জেলায় দলের রির্টার্নিং অফিসার মনোজ পাণ্ডে। তিনি বলেন, “বেবিনা খাতুন দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের দল করছেন। সাংগঠনিক হিসাবে অত্যন্ত শক্তিশালী। আবারও প্রমাণ হয়ে গেল যে, যোগ্যতা ছাড়া আমাদের দল আর কিছুই দেখে না।”

কিন্তু এনআরসি নিয়ে প্রবল বিতর্কের মধ্যে তিনি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি হলেন। এতে ভুল বার্তা যাবে না তো? প্রশ্ন করতেই উত্তেজিত গলায় বেবিনা বলেন, “না, বরং উল্টোটাই হবে। আমি সবাইকে বোঝাতে পারব যে, ভারতীয় মুসলিমদের কোনও ভয় নেই। যাঁরা ও পার বাংলা থেকে অপরাধ করে এ পারে আশ্রয় নিচ্ছে আমরা তাদেরকে তাড়াবো। দেশকে ভালবাসি বলেই বিজেপি করি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন