চাহিদা অনেক। কিন্তু রাজ্যে ডিমের যোগান অর্ধেক। বাড়তি চাহিদা মেটাতে ভরসা ভিন্ রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, রাজ্য ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভর হোক।
তাঁর সেই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে গাংনাপুর থানার মাঝেরগ্রাম এলাকায় বড় মাপের মুরগি খামার তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে একটি সমবায় সমিতি। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজও শুরু হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন দেড় লক্ষ ডিম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন সমবায় কর্তৃপক্ষ।
রানাঘাট ২ ব্লকের মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের সেজদিয়া ও অনন্তপুরে ‘গাংনাপুর লার্জ সাইজ প্রাইমারি কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটি’র প্রায় ১৫০ বিঘা জমি রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১০০ বিঘা জলকর রয়েছে। সেখানে মাছ চাষ করা হবে। বাকি জমিতে মুরগি খামার গড়া হবে। একই সঙ্গে মুরগির খাবার তৈরির কারখানাও থাকবে।
মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মন্টু বর্মন বলেন, ‘‘এখানে যে জমি রয়েছে, দু’লক্ষের বেশি মুরগি পালন সম্ভব। তাতে রোজ গড়ে দেড় লক্ষ ডিম উৎপাদন হবে। শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পরোক্ষ ভাবে আরও অনেক বেশি লোক কাজের সুযোগ পাবেন।” এলাকার যুবকরা বলছেন, ‘‘আমাদের এলাকায় কোনও কল কারখানা নেই। অধিকাংশই বেকার। কিছু লোক কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। এই প্রকল্প হলে অনেকেই কাজের সুযোগ পাবেন।” তবে কবে এই প্রকল্প হবে সে বিষয়ে তাঁদের কোনও ধারণা নেই বলেই জানালেন তাঁরা। সমবায়ের ম্যানেজার মণীন্দ্র বর্মন বলেন, “প্রকল্প তৈরি করতে ১৯ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রথমে প্রতিদিন ৫০ হাজার ডিম উৎপাদন করা হবে। ধাপে ধাপে উৎপাদন বাড়ানো হবে।” মণীন্দ্র জানান, সমবায় সমিতির অধীনে চারশো মহিলা সর্নির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এর সঙ্গে চার হাজার মহিলা যুক্ত রয়েছেন। অধিকাংশ কাজটা তাঁদের দিয়ে করানো হবে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সহযোগিতা পেতে জেলা পরিষদে কাছ থেকে সাহাজ্য চাওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদ সভাধিপতি বাণীকুমার রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন এ ধরনের খামার তৈরি করে ডিম উৎপাদন করা হোক। এ জন্য, ভর্তুকিও দেবে সরকার।” তিনি জানান, ওখানে সমবায় সমিতি খামার তৈরি করবে। ভর্তুকি, ব্যাঙ্ক ঋণ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে জেলা পরিষদ তাদের সাহায্য করবে। সমবায়ের উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে রানাঘাটের এক ডিম ব্যবসায়ী বলেন, “এখন অন্ধপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে ডিম আনতে হচ্ছে। এখানে খামার হলে অবশ্যই ভাল হবে। দামেও সস্তা পড়বে।