বাঁশ দিয়ে খুঁচিয়ে বলল, ফোন দে

গোটা চত্বর জুড়ে জায়গায়-জায়গায় জটলা করে তারা দাঁড়িয়ে। চোখ দিয়ে মাপছে সবাইকে। মোটরবাইকটা রেখেছিলাম একটু দূরে সিঙ্গি হাইস্কুলের সামনে।

Advertisement

গৌতম প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:৫৮
Share:

লালবাগে মহকুমাশাসকের অফিসে ছবি তুলতে যাই সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ। চার দিকে থিকথিকে লোক। বেশিরভাগই ‘বহিরাগত’। হাতে লাঠি, কোদালের বাঁট, বাঁশ, উইকেট। গোটা চত্বর জুড়ে জায়গায়-জায়গায় জটলা করে তারা দাঁড়িয়ে। চোখ দিয়ে মাপছে সবাইকে। মোটরবাইকটা রেখেছিলাম একটু দূরে সিঙ্গি হাইস্কুলের সামনে। স্কুলের পিছনের একটা দরজা দিয়ে ঢুকে সামনের দিকে চলে এসেছিলাম। সেখানে কোলাপসিবল গেটে তালা দেওয়া। গেটের ভিতর দাঁড়িয়ে একটা ফোন করার জন্য সবে মোবাইলটা বার করে কানে ঠেকিয়েছি। ঠিক তখনই ওরা ছুটে এল!

Advertisement

কুড়ির কোঠার জনা দশেক। হাতে বাঁশ আর লাঠি। গেটের ফাঁক দিয়ে হাত বাড়িয়ে এক জন আমার কলার চেপে ধরে চিৎকার করতে থাকল—‘ছবি তুলবি? খবরের কাগজের টিকটিকি? ছবি তোলা বার করছি। দে মোবাইল’! আর এক জন ততক্ষণে হাত বাড়িয়ে আমার কাঁধে ঝোলানো ক্যামেরার ব্যাগটা ধরে টানতে শুরু করেছে। সঙ্গে গালিগালাজ। একটা ছেলে গেটের ফাঁক দিয়ে বাঁশ ঢুকিয়ে আমার পেটে-বুকে-মুখে খোঁচাতে লাগল। আমার চশমা গুঁড়ো হয়ে গেল। পেটে যন্ত্রণায় দম আটকে যাচ্ছিল। আর এক জন ডান হাত মুচড়ে দিল। কোনওক্রমে হাত ছাড়িয়ে আমি স্কুলের ভিতরে পালালাম।

সেখানে পরিচিত মাস্টারমশাই ছিলেন, আলি হোসেন। তিনি স্থানীয় তৃণমূল নেতা। ওঁকে সব বললাম। উনি বাইরে থেকে তৃণমূলের কয়েকটি ছেলেকে ডেকে বললেন, ‘‘এঁকে মারছ কেন? ইনি ছবি তোলেননি, ওঁর ফোন দেখো।’’ ছেলেগুলো ফোন পরীক্ষা করতে লাগল, কিছু পেল না। তখন আমাকে চলে যেতে বলল।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন