যা হওয়ার তা কার্যত হয়েই গিয়েছে। ভোটের আগে আর প্রচারের তেমন দরকার নেই। তাই জঙ্গিপুরের দুই ব্লকে বাতিল করা হল রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর প্রচারসভা।
এই ছবিটা কিছু দিন আগেও প্রায় ভাবাই যেত না। শুভেন্দু জেলার দায়িত্ব নেওয়ার আগে যেখানে অধীর চৌধুরীর নামে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত, সেখানে গত কয়েক বছরে লাগাতার দলবদলের জেরে কংগ্রেস প্রায় সাইনবোর্ড হতে বসেছে। একই হাল বামেদেরও।
কিন্তু শুধু এই কারণেই যে তৃণমূল নেতার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে আসার দরকার হচ্ছে না, তেমনটাও নয়। বরং মনোনয়ন জমার প্রথম দিন থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠেছে, যার জেরে বহু জায়গাতেই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বিরোধীরা। তার ব্যতিক্রম নয় জঙ্গিপুরও। যদিও শাসক দলের দাবি, মানুষ সঙ্গে নেই বলেই প্রার্থী দিতে পারেনি অন্যেরা।
আগামী ১৬ এপ্রিল জঙ্গিপুর শহর লাগোয়া তালতলা মাঠে সভা করতে আসার কথা ছিল শুভেন্দুর। সেই মতো প্রচারও চলছিল দলের তরফে। কিন্তু মনোনয়ন দাখিলের পর্ব শেষ হতেই দেখা যায়, রঘুনাথগঞ্জের দুই ব্লকে ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির সবই কার্যত তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে। একই দশা সুতি ২ এবং শমসেরগঞ্জের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিরও। হাতে গোনা কিছু আসনে নির্বাচন হলেও এই চার ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে আসলে কোনও প্রভাব পড়বে না।
তৃণমূলের জঙ্গিপুর মহকুমা কমিটির সভাপতি বিকাশ নন্দের বক্তব্য, রঘুনাথগঞ্জে দু’টি ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তাই প্রচারও আর দরকার নেই। সেই কারণেই ১৬ এপ্রিল শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী সভা বাতিল করা হয়েছে। যে হেতু ফরাক্কায় লড়াই হবে, তাই ১৭ এপ্রিল শুভেন্দুর সভা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানে। পরে তিনি সুতি ১ ও সাগরদিঘি ব্লকেও যাবেন।
ফরাক্কার মতো সুতি ও সাগরদিঘি ব্লকেও গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে প্রায় সব আসনেই টক্কর হচ্ছে। ওই তিন ব্লকেই বিরোধী প্রার্থীরা অনেকটা নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ৪৫২ আসনের মধ্যে ১৩টি ছাড়া সবেতেই লড়াই হচ্ছে। সাগরদিঘিতে ১৯৯টি আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ৬২৩, ফরাক্কায় ১৪৭ আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ৫৩৫। সুতি ১ ব্লকে ১০৬টি আসনে প্রার্থী রয়েছেন ৩০১ জন।