প্রতিবাদ! বহরমপুরে ট্রাফিক পুলিশ অফিসের সামনে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
কর্তব্যরত অবস্থায় এক ট্রাফিক ওয়ার্ডেনকে মারধরের অভিযোগ উঠল ট্রাফিক পুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার অশেষকুমার ঝাঁ-এর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ ট্রাফিক ওয়ার্ডেনরা যান নিয়ন্ত্রণ করা বন্ধ করে দেন। বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
খবর পেয়ে বহরমপুর থানার আইসি এবং বহরমপুরের টাউন-সাব-ইন্সপেক্টর সেখানে হাজির হয়ে বিক্ষোভ সামাল দেন। পরে বিক্ষোভকারীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দেখা করেন। যদিও ওই পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমে পড়েনি।
ওই ঘটনার পরে যান নিয়ন্ত্রণ করা থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়ায় বহরমপুরের বিভিন্ন জনবহুল ও ব্যস্ততম রাস্তা থেকে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বর, পঞ্চাননতলা ও চুঁয়াপুর মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজট হয়। যাত্রী, পথচারী ও চালকদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।
এ দিন সকাল থেকে বহরমপুর গার্লস কলেজ মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন অর্জুনকুমার রায় ও তপনকুমার মণ্ডল নামে দু’জন ট্রাফিক ওয়ার্ডেন। সকাল থেকে যান নিয়ন্ত্রণ করে ক্লান্ত অর্জুনবাবু ওই মোড়ের মাথায় বসে জিরোচ্ছিলেন। তখন যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তপনবাবু। সেই সময়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার অশেষকুমার ঝাঁ ওই পথে যাওয়ার সময়ে ওই ট্র্যাফিক ওয়ার্ডেনকে বসে থাকতে দেখেন। তার পরেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে ওই ওয়ার্ডেনের কলার ধরে ধাক্কা মেরে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
অর্জুনবাবুর অভিযোগ, ‘‘সকাল থেকে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করার ফলে শরীর খারাপ করছিল। তখনই একটু বসেছি। এমন সময়ে গাড়িতে নেমে সাহেব আমার কলার ধরে ধাক্কাধাক্কি এবং গালিগালাজ করেন। তাঁর গাড়ি দেখে উঠে স্যালুট দিইনি বলে আমার উপরে তাঁর রাগ। ওই রাগে আমাকে মারধরও করে এবং আমার পরনে থাকা পোশাকও ছিঁড়ে দেন তিনি।’’
তপনবাবুর দাবি, ‘‘সকাল ৮টা থেকে এক টানা দাঁড়িয়ে ডিউটি করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। দু’জনে দায়িত্ব ভাগ করে যান নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুপুর ১টা নাগাদ সাহেব গাড়ি নিয়ে এসে আচমকা দাঁড় করিয়ে কোনও কথা না বলে ‘গাড়িতে ওঠ’ বলে কলার ধরে টানাটানি শুরু করে। এতে জামা ছিঁড়ে যায়। এমনকী তিনি ঘাড় ধাক্কাও দেন।’’
ডেপুটি পুলিশ সুপার অশেষকুমার ঝাঁ অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই ট্রাফিক কর্মী মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’