বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির এক আমানতকারী। টাকা ফেরত না পেয়ে সুমন মণ্ডল নামে ওই আমানতকারী গত সোমবার লালবাগ আদালতে গৌরীশঙ্করবাবু ও রমেশ বারিক নামে আরও এক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সুমনের আইনজীবী প্রীতীন্দ্রনারায়ণ চন্দ্র বলেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯, ৪২০ ও ৩৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ থানার আইসি-কে অভিযোগপত্রকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এসিজেএম পাপিয়া দাস।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘সুমন মণ্ডলকে চিনিই না।’’ আইসি আশিস দে জানান, আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।
সুমন মণ্ডলের বাড়ি মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার তেঁতুলিয়া গ্রামে। গৌরীশঙ্কর ওই থানা এলাকারই হাঁড়িভাঙা গ্রামের বাসিন্দা। রমেশ বারিক দৌলতাবাদ থানার কামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। উভয়েই রোজভ্যালির এজেন্ট ছিলেন। পেশায় দিনমজুর সুমন মণ্ডলের দাবি, ‘‘গৌরীশঙ্কর ঘোষ ও রমেশ বারিক একাধিক বার আমাদের বাড়িতে এসে মাকে সাব এজেন্ট হতে অনুরোধ করে। মা শেষমেশ ওঁদের অনুরোধ মনে সাব এজেন্ট হয়। আমাকে মাসিক ৯০ টাকার রেকারিং অ্যাকাউন্ট খুলতে দু’জনেই পীড়াপীড়ি করেন। ২০১০ সালের আমি রেকারিং অ্যাকউন্ট খুলি।’’ অভিযোগ, রোজভ্যালি মুখ থুবড়ে পড়লে ওই দু’জনও বেঁকে বসেন। ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি অ্যাকাউন্টেরে মেয়াদ শেষ হয়। সুমনের প্রাপ্ত দাঁড়ায় ৮৮১২ টাকা। সুমনের দাবি, ‘‘টাকা চাইতে গেলে ওঁরা আমাকে অপমান করতেন। অনেক সময় কটু কথা অবধি শুনতে হয়েছে। তাছাড়া ওঁদের জন্যই মাকে বিপদে পড়তে হয়েছে। এখন ওঁরা দিব্যি হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। আর আমাদের যত ঝামেলা সহ্িয করতে হচ্ছে।’’ গৌরীশঙ্কর বলেন, ‘‘২০০৯ সাল পর্যন্ত আমি রোজভ্যালির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তারপর দলের কাজের জন্য সব কিছু ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাছাড়া আমানতকারীদের সব টাকা মিটিয়ে দিয়েছি। আমার কাছ থেকে কেই এক পয়সাও পাবেন না। কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে ওই ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। এর মোকাবিলা আমি আদালতেই করব।’’