বিস্ফোরণের পরে। পারুলিয়ায় কৌশিক সাহার তোলা ছবি।
শৌচাগারটা তেমন ব্যবহারই হত না। আবর্জনার আস্তকুঁড় হয়ে ওঠা সেই শৌচাগারেই রাখা ছিল বোমা। শুক্রবার সকালে তা ফেটেই এলাকায় ছড়াল খাগড়াগড়ের আতঙ্ক।
তবে খড়গ্রামের পারুলিয়ার ওই বিস্ফোরণে আগুনে ফের পুড়ল শাসক দলের মুখ। বোমা মজুত করে রাখার পিছনে পারুলিয়া পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের রুবিনা বিবির স্বামী আসরাফুল শেখের খোঁজ করছে পুলিশ। যে শৌচাগারে ওই বোমাগুলি রাখা ছিল সেটি আসরাফুলের বোনের বাড়ি বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ।
কিন্তু শৌচাগারে বোমা কেন?
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, মাস ছয়েক আগে, পারুলিয়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন তৈরি করা নিয়ে আসরাফুলের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়েছিল দলেরই অন্য এক গোষ্ঠীর। দু’পক্ষের বোমাবাজিতে এলাকা উত্তপ্ত ছিল বেশ কিছু দিন। সেই ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
বোমা বিস্ফোরণে মারাও গিয়েছিল আসরাফুলের এক অনুগামী।
ভোট মিটতেই সেই বিরোধ ফের মাথা চাড়া দিচ্ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার জেরেই মজুত করা হচ্ছিল বোমা। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি কমতেই রাতে নিয়মিত বোমা বাঁধা হত বলেও জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। যা রাখা হত ওই পরিত্যক্ত শৌচাগারেই।
গত কয়েক বছর ধরেই আসরাফুলের ওই খুরতুতো বোন সপিরবারে মুম্বই প্রবাসী। গ্রামের একটি বড় পুকুরের ধারে বাড়ির শৌচাগারে ওই বোমাগুলি তাই নিভৃতেই জমা করা হয়েছিল। কোনও বাবে তা ফেটেই ওই বিপত্তি।
পড়শি হালিম শেখের স্ত্রী সারাবানু বিবি উঠানে ধান সিদ্ধ করছিলেন এ দিন। তিনি বলেন, “বিকট শব্দ হল। প্রথমে ভেবে ছিলাম রাস্তাতে কোনও ট্রাকের টায়ার ফেটেছে। সকলেই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু দেখি আমার মেয়ের বাড়ির শৌচাগার ভেঙে গিয়ে সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।” কারা রেখেছিল বোমা, তা অবশ্য খোলসা করতে চাননি সায়রা। তবে এ দিন আসরাফুল বলছেন, “ওই বাড়িটা আমার বোনের বাড়ি। কিন্তু শৌচাগারে কারা বোমা রেখেছিল তা বলতে পারব না। আমার স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর বদনাম করতেই ওই কাজ কেউ করেছে।’’