সময় পেরিয়ে যায়, তাঁদের আর সময় হয় না।
দুপুরে ডাকলে তাঁরা জড়ো হতে হতে বিকেল গড়িয়ে যায়। সকালের বৈঠকে তাঁরা পৌঁছন মাঝ-দুপুরে।
প্রায় রেওয়াজে দাঁড়িয়ে যাওয়া, মুর্শিদাবাদ জেলার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এমন আচরণকে ‘ঔদ্ধত্য’ বলেই মনে করছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিরুপমবাবু তাই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ডিসেম্বরে জেলায় এসেছি। যতবার ওঁদের (বিএমধএইচ) ডেকেছি ততোবারই এই এক ঘটনা। পই পই করে বলেছি। এ বার জেলাশাসকের অনুরোধে পিছিয়ে গেলাম ঠিকই, তবে ফের এমন হলে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।’’
এ দিন, ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বৈঠকে ডেকেছিলেন জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী। কিন্তু স্বভাব বদলায়নি। দুপুর গড়িয়ে গেলেও, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে একা বসে থেকে শেষ পর্যন্ত উঠেই য়েতে হয়েছিল শরদকে। অপমানিত নিরুপমবাবু চেয়েছিলেন বৈঠক বাতিল করে বিএমওএইচদের ‘শো-কজ’ করতে। তবে, জেলাশাসক ধীরে চল নীতেত বিশ্বাসী। বলে যান, সন্ধের মধ্যে, সকলে চলে এলে এক বার ‘চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।’ সে কথা আর ফেলতে পারেননি নিরুপমবাবু।
দুপুর দু’টো থেকে পিছিয়ে যেতে থাকা বৈঠক অবশেষে শুরু হয়, তবে সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। বৈঠকের শুরুতেই বিএমওএইচ-দের এই ‘আচরণ’ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ আড়াল করেননি নিরুপমবাবু। তাঁদের সতর্ক করেন জেলাশাসকও।
বৈঠকে, গ্রামীণ মা-শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে খুব বেশি আশার কথা শোনাতে পারেননি বিভিন্ন ব্লকের আধিকারিকেরা। জঙ্গিপুর, সমশেরগঞ্জ, ফরাক্কা, লালগোলা ও বড়ঞা ব্লক যে বেশ পিছিয়ে রয়েছে তা কবুল করেছেন। কোথাও শয্যার সমস্যা। কোথাও পরিকাঠামো। নিরুপমবাবু জানান, সচেতনতার অভাবে অধিকাংশ এলাকায় প্রসূতি মায়ের মৃ্ত্যুর হার যথেষ্ট বেশি।