মোবাইল ছিনিয়ে খুন হল শাহেনশা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় শাহেনশা মদ খাওয়ার জন্য চারাতলার এক যুবকের থেকে ১০০ টাকা চেয়েছিল। তা না দেওয়ায় তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় শাহেনশা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০১:৩১
Share:

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা বেশ দীর্ঘ। অপরাধমূলক কাজে সে একাধিক বার জেল খেটেছে। তিনটি মামলায় তার বিরুদ্ধের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পুলিশের খাতায় সে ‘ফেরার’ থাকলেও এলাকায় হুমকি দিয়ে তোলাবাজি করত বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সোমবার সকালে চারাতলায় বহরমপুর-কান্দি রাজ্য সড়ক লাগোয়া পাটখেত থেকে সেই শাহেনশা শেখ ওরফে বুধন শেখের (২৬) দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, তোলাবাজি করতে গিয়েই খুন হয়েছে চারাতলা লাগোয়া উদয়চাঁদপুরের বাসিন্দা শাহেনশা। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “মোবাইল কেড়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক দুষ্কৃতী খুন হয়েছে। ওই ঘটনায় ন’জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় শাহেনশা মদ খাওয়ার জন্য চারাতলার এক যুবকের থেকে ১০০ টাকা চেয়েছিল। তা না দেওয়ায় তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় শাহেনশা। শাহেনশা মাঝেমধ্যেই এমন কাণ্ড করত বলে অভিযোগ। ওই যুবক এলাকার আরও কয়েক জন নিয়ে শাহেনশাকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে অভিযোগ। সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ শাহেনশা চারাতলা মোড়ের মাথায় এলে তাকে তাড়া করে। শাহেনশা পাট খেতে ঢুকে পড়লে সেখানে তাকে মারধর করা হয়। তার পরে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। ওই পাটখেত থেকেই শাহেনশার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

অভিযোগ, শাহেনশা কথায় কথায় নিজেকে তৃণমূলের লোক বলত। সেই কারণে ভয়ে তাকে কেউ কিছু বলত না। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে তোলাবাজি করত। নিহত শাহেনশা তৃণমূলের কর্মী কি না তা স্পষ্ট করে জানাতে চাননি জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস। তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে এক জন মানুষ খুন হয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুক।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহেনশার নিজস্ব জমি জায়গা নেই। কাজও তেমন কিছু করত না। মোটরবাইকে এলাকায় ঘুরে বেড়াত। ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি করত। তাকে ভয়ও পেত এলাকার লোকজন। শাহেনশার মা বলছেন, “ছেলে এক জনের ফওন নিয়ে এসেছিল। আমি জানতে পেরে ছেলেকে ফোন ফেরত দেওয়ার কথাও বলেছিলাম। এ দিন সকালে সে ফোন ফেরত দিতে গিয়েছিল। তখনই তাকে খুন করা হয়। ছেলে একটু নেশা করত। কিন্তু কোনও অন্যায় কাজ করত না।’’

শাহেনশার দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। তার স্ত্রীর কথায়, ‘‘ও প্রতিদিন সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে মোড়ে যেত। কিন্তু কারও ফোন পেয়ে এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ওরা ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার স্বামীকে খুন করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন