স্বাধীনতা দিবসের আগে বিএসএফের নজরদারি। করিমপুরে। নিজস্ব চিত্র
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে এমনিতে ওঁদের কোনও মাথাব্যথা নেই। অনেকেই এমনিতে হয়তো ভুলে যেতেন, কবে দিনটা এসে চলে গেল। কিন্তু বিএসএফের অতি সতর্কতা তা ভুলতে দেয় কই?
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বহু মানুষ রোজই কাঁটাতারের ও পারে নিজের জমিতে চাষ করতে যান। সীমান্তের গেটে বিএসএফের কাছে ভোটের পরিচয়পত্র জমা দিয়ে যেতে হয়। বছরভরই পাহারায় থাকেন জওয়ানেরা। কিন্তু অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পেরোলেই চোয়ালগুলো একটু বেশি শক্ত হয়ে ওঠে যেন।
সে কথা জানেন কাঁটাতার ধারের মানুষেরাও। মঙ্গলবার সকালে আনাজ জমিতে গিয়েছিলেন হোগলবেড়িয়ার অচিন্ত্য মণ্ডল। বলেন, “সীমান্তের বেশির ভাগ মানুষই চাষবাস করেন এবং তাঁদের অনেকেরই জমি রয়েছে কাঁটাতারের ও পারে। বিএসএফের কাছে নথি জমা দিয়ে সবাই কাজে যান। জওয়ানদের সঙ্গে মুখচেনাও হয়ে যায়। কিন্তু এই দিনটার আগে ওঁরা খানিক অচেনা হয়ে যান।’’ বুধবার যে স্বাধীনতা দিবস, তা মাথাতেই ছিল না অচিন্ত্যর। ‘‘কিন্তু বিএসএফের বাড়তি নজরদারি দেখেই মনে পড়ে গেল! স্বাধীনতা দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবসের সময়েই মুখগুলো এ রকম হয়ে ওঠে। ও পারে যাওয়ার সময়ে খাওয়ার পাত্র কিংবা দেহ তল্লাশি করা হয় যা অন্য দিন করা হয় না’’— বলে হালকা হাসেন অচিন্ত্য।
সীমান্তের আর এক চাষি প্রণব মণ্ডলের কথায়, “এমন দিনে গেট ছাড়াও কাঁটাতারের পাশ দিয়ে টহল দেয় বিএসএফ। যা দেখেই আমরা বুঝে যাই, হয় আজ বা কাল কোনও বিশেষ দিন নয়তো সীমান্তে কোনও সমস্যা হয়েছে। জওয়ানদের ঠান্ডা দৃষ্টি, শক্ত চোয়াল আর বর্ডারের রাস্তায় ভারী বুটের শব্দই বুঝিয়ে দেয় কড়াকড়ি চলছে।” এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ মেঘনা সীমান্তে দেখা গেল সতর্ক প্রহরায় জওয়ানরা। গেট পেরিয়ে মাঠে যাওয়ার জন্য ভোটার পরিচয়পত্র জমা দিচ্ছেন চাষিরা। জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে খাবারের বাক্স, সারের বস্তাও তল্লাশি করা হচ্ছে। বিএসএফের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, সারা বছরই সীমান্তে কড়া নজর রাখেন জওয়ানরা। তবে মঙ্গল ও বুধবার বিশেষ ‘নাকা চেকিং’ চলছে। মাছি গলারও জো নেই!