প্রাক্তনী: বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র
মাঠের রং মফস্সলেও সবুজ।
বছর কয়েক আগে, সদ্য সিরিজ জয়ের পরে হোটেলের লাউঞ্জ থেকে রাঁচী ফেরার জন্য প্রায় ছুটন্ত লোকটা কেন যে বিড় বিড় করছিলেন, এখনও স্পষ্ট হয়নি।
তবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কথাটা যে এক্কেবারে নিখাদ, বোঝা যাচ্ছিল সে সময় থেকেই। হরিয়ানার হদ্দ মেঠো গ্রাম, উত্তর প্রদেশের প্রান্তিক শহর...অত দূর যেতে হবে কেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি? ফিক করে হেসে বলেছিলেন, ‘‘অ্যাম প্রাউড দ্যাট অ্যাম ফ্রম রাঁচী।’’ ছোট্ট ঝাড়খণ্ডী শহর।
পাঁচ বছর পরে সেই প্রশ্নটাই ধরিয়ে দিয়ে গেলেন তিনি, যাঁর সঙ্গে ধোনির সম্পর্ক ‘মধুর’। মঙ্লবার বহরমপুরে এসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় একটু লাজুক হেসেই বলছেন, ‘‘শহর থেকে দূরে, এই সব জেলা শহরে ক্রিকেট ক্লিনিক খোলার কারণটাই এটা, ছোট শহর থেকে প্লেয়ার তুলে আনা।’’ তার পর, নিজেই হুড়মুড় করে উদাহরণ দিচ্ছেন— ‘‘এখন তো দেশের ছোট ছোট শহর, জেলা থেকে হুহু করে ক্রিকেটার উঠে আসছে। ধোনি এসেছে রাঁচি থেকে। রাঁচি থেকে কেউ ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলবে, কেউ কোনও দিন ভাবতে পেরেছিল।’’
থামেননি, কর গুনে দেখাচ্ছেন, , অশোক দিন্দা মেদিনীপুর থেকে, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মনোজ তেওয়ারি এসেছে হাওড়া থেকে। তার পর, ‘‘আমি কলকাতার বেহালাতে থাকি, ওটা কিন্তু, জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা।’’
হাসছেন সৌরভ। তবে, বহরমপুর বৈরগাছি-মানকরা এলাকায় একটি ইংরেজি মাধ্যম একটি স্কুলে নিজের নামে ক্রিকেট ক্লিনিকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে বার কয়েক রেগেও গিয়েছেন তিনি।
না রেগে উপায়ই ছিল না। সেলফি’র বেয়াড়া তালিকায় যেখানে বিডিও থেকে বেল বিক্রেতা, ছাত্রী থেকে কনস্টেবল— বাদ যাননি কেউই। আর সেই হট্টগোল সামাল দেওয়ার চেষ্টা দূরে থাক, বরং পুরনো ক্রেজ নিয়েই সৌরভকে দু’চোখে গিলতে বেঁহুঁস ছিলেন জেলার পুলিশ কর্মীরা। গাড়ি দাঁড় করিয়ে কাচের আড়াল থেকেই হাত নেড়ে গেলেন যে মহিলা পুলিশের দঙ্গল তাঁদের সামাল দেয় কে! বিরক্ত প্রাক্তনীকে তাই এক সময়ে বলতেও শোনা গিয়েছে— ‘‘প্লিজ এ বার একটু...’’
ক্ষুব্ধ হয়েছেন আরও একটা কারনে। মুর্শিদাবাদ জেলায় ‘ক্রিকেট ইন্ডোর স্কুল’ তৈরির জন্য ১৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিল সিএবি। প্রথম পর্যায়ের সাত লক্ষ টাকা পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাছে। মাসের পর মাস ঘুরে গেলেও একটি ইটও পড়েনি। জানতে পেরেই সিএবি সভাপতি মুর্শিদাবাদ জেলাশাসককে খোঁজ নিতে বলেন।