তৃণমূলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সদ্যগড়া প্রচার কমিটি দু’টিই শেষতক বাতিল করে দিলেন দলের মুশির্দাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। দলের জেলা মুখপাত্র অশোক দাসকে মারধরের ঘটনা ও তাই নিয়ে দায়ের করা এফআইআর বিষয়ে তদন্ত করার জন্য দলের জেলাস্তরের তিন জন নেতাকে নিয়ে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছেন তিনি।
বিধায়কদের বিধানসভা এলাকার ও পুরপ্রধানদের পুরসভা এলাকার দলীয় চেয়ারম্যান হিসাবেও নিয়োগ করা হয়েছে বৃহস্পতিবারের ওই সভায়। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, চেয়ারম্যান, ব্লক ও টাউন নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেডের সমাবেশের প্রচার করবেন। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কাজিয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ময়দান এলাকায় একটি তাঁবুতে জেলাস্তরের ২৯ জন নেতাকে নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সেখানেই ওই সব নির্দেশ জারি করা হয়।
জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশে মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ‘তিন লাখেরও বেশি’ লোক নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ ওই দিনের সভায় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি, সুব্রত সাহা। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে গত ৭ ডিসেম্বর জেলাস্তরের ও ব্লকস্তরের ‘মনিটরিং কমিটি’ গড়েন সুব্রত। পর দিন ৮ ডিসেম্বর হরিহরপাড়ার বিধায়ক, দলের জেলা কমিটির নির্বাহী সভাপতি নিয়ামত শেখ ও পাঁচ মহকুমা সভাপতিকে নিয়ে বৈঠক করে প্রতি মহকুমার জন্য পাঁচটি পৃথক কমিটি গড়ে দেন তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র, জেলার সহ-সভাপতি অশোক দাস। পর দিন রবিবার বিকালে বহরমপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এক দল দুষ্কৃতী অশোক দাসকে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের ঘটনায় জডিত থাকার অভিযোগে পুলিশ বহরমপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর, দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কানাই রায় ও জেলা কমিটির সম্পাদক ফিরোজ শেখকে গ্রেফতার করে। তাঁরা এখনও জামিন পাননি।
বৈঠকে ছিলেন, ১১ জন বিধায়ক, ৭ জন পুরপ্রধান, ৫ মহকুমা সভাপতি এবং ৬ জন জেলানেতা। ওই বৈঠকে থাকা এক বিধায়ক বলেন, ‘‘অশোক দাসকে মারধর করার ঘটনা ও মারধরের বিষয়ে দায়ের করা এফআইআর নিয়ে তদন্ত করার জন্য দলের জেলা চেয়ারম্যান মহম্মদ সহরব, বিধায়ক অপূর্ব সরকার ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি মহম্মদ আলিকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন পর্যবেক্ষক।’’
অশোক দাসকে মারধরে অভিযুক্ত সাত জনই সুব্রত সাহার ঘণিষ্ঠ। তাই নিয়ে বৈঠকের মধ্যেই সুব্রত সাহার সঙ্গে দলের লালবাগ মহকুমা সভাপতি রাজীব হোসেনের কাজিয়া বেধে যায়। বৈঠকে ছিলেন এমন এক জন পুরপ্রধান বলেন, ‘‘অবশেষে রাজীবকে শুভেন্দু অধিকারী ভর্ৎসনা করলে কাজিয়া থামে। নিয়মত শেখেরও সমালোচনা করেন শুভেন্দু। পাল্টা দু’টি প্রচার কমিটি গঠনের বিষয়েও দু’পক্ষের সমালোচনা করে কমিটি ভেঙে দেন পর্যবেক্ষক। আগামী লোকসভা ভোটে লিড দিতে না-পারলে সংশ্লিষ্ট পুরসভার কাউন্সিলদের পরবর্তী নিবার্চনে প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়ে দল ভাববে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।’’