এনআইএ-সিবিআই জোড়া হানা
Crime

স্তব্ধ সীমান্তে লাগাম পাচারে

কেবল চোরা পাচারের ক্ষেত্রে নয়, জলঙ্গির উদয়নগর এবং পরাশপুর চর এলাকার বাসিন্দারাও বলছেন এই কটা দিনে বিএসএফের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। তাদের গ্রাম থেকে মূল ভূখণ্ডে আসতে গেলে বা সেখান থেকে ফিরতে গেলে বিএসএফউের সঙ্গে প্রায় লড়াই করতে হচ্ছে।        

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:০৭
Share:

লিউইয়নকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়ি তল্লাশি। ঘিরে ফেলা হয়েছে গ্রাম। নিজস্ব চিত্র

আজ এনআইএ তো কাল সিবিআই— কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জোড়া হানায় সীমান্তে পাচারে ভাঁটা পড়েছে। বিএসএফ পাচার সংক্রান্ত যে নিত্যকার বুলেটিন প্রকাশ করে তাতেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, গরু থেকে মাদক, কাশির সিরাপ থেকে নুনের বস্তা— মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকায় এ ক’দিনে কিছুই ধরা পড়েনি।তবে সীমান্তের এই ঘটনাহীন সময় নিছকই সাময়িক বলে মনে করছে জলঙ্গি থেকে রানিনগর— সীমান্তের গ্রামগুলি। কোন্দ্রীয় সংস্থাগুলির আনাগোনা বন্ধ হলেই ফের নতুন করে পাচার যে শুরু হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত তাঁরা। বিএসএফের এক কর্তাও বলছেন, ‘‘কম-বেশি যাই হোক, পাচার ফের শুরু হবে। পরিস্থিতি বুঝতেই এখন চুপ করে আছে পাচারকারীরা।’’

Advertisement

মোটা টাকার বিনিময়ে সাধারনের অবৈধ পথে চলাচলেও এ ক’দিনে লাগাম পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছে, এত দিন অনেক কষ্ট করেও বিএওসএফ যা করতে পারিনি, দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযানে ম্যাজিকের মতো তা হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গরু পাচার কম হলেও কিছু দিন ধরে মাদক এবং কাশির সিরাপ পাচারের প্রবণতা বেড়েছিল ডোমকল এলাকায়। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছও চোরাপথে আসছিল সীমান্ত দিয়ে, কিন্তু সপ্তাহ খানেক ধরে সেই চোরা পাচার বন্ধ বললেই চলে। এই ক’দিনে সীমান্ত থেকে উদ্ধার হয়নি কোনও পাচার সামগ্রী। জেলার এক বিএসএফ কর্তা বলছেন, ‘‘প্রতিরাতেই যেখানে কিছু-না-কিছু আটক করতে হচ্ছিল আমাদের সেখানে সপ্তাহ খানেক ধরে পাচারের কোনও গন্ধ নেই, দেখা নেই পাচারকারীদের। ফলে অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে আমাদের জওয়ানেরা।’’ রানিনগর সীমান্তের এক বিএসএফ জওয়ান বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক দিনের হানাতেই বদলে গিয়েছে সীমান্তে চেহারা, এই ঘটনায় আমরাও কিছুটা নিশ্চিন্তে রয়েছি।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, ‘‘কেবল পাচারকারী নয় বিএসএফের একাধিক কর্তার নাম জড়িয়েছে গরু পাচারের সুতোয়। ফলে অস্বস্তি পাচারকারীদের মত বিএসএফের অন্দরেও। এই সময়ে আর কোন ঝুঁকি নিতে কেউ রাজি হচ্ছে না। মাদক বা কাশির সিরাপ পাচারের ক্ষেত্রে বিএসএফের যে গা-ছাড়া ভাব ছিল সেটাও আর নেই। ফলে পাচারকারীরাও বুঝে গিয়েছে এই সময়ে কোনও রকমের ঝুঁকি নেওয়া যাবে না পাচারের ক্ষেত্রে।’’ কেবল চোরা পাচারের ক্ষেত্রে নয়, জলঙ্গির উদয়নগর এবং পরাশপুর চর এলাকার বাসিন্দারাও বলছেন এই কটা দিনে বিএসএফের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। তাদের গ্রাম থেকে মূল ভূখণ্ডে আসতে গেলে বা সেখান থেকে ফিরতে গেলে বিএসএফউের সঙ্গে প্রায় লড়াই করতে হচ্ছে।

Advertisement

গোয়েন্দাদের গাড়িতে লিউইয়ন। নিজস্ব চিত্র

রানিনগর সীমান্তের এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘মাস খানেক আগেও ওপার থেকে মানুষ আসা এবং এপার থেকে যাওয়া চলছিল মোটা টাকার বিনিময়ে। কিছুদিন থেকে সেই যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে, ফলে যারা এপারে আটকে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকেরা ফ্যাসাদে পড়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন