কাজে গতি আনতে অ্যাপে সিভিক

নদিয়ার মোট ২৪টি থানায় প্রায় ৬২০০ সিভিক ভলান্টিয়ার আছেন। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা সামাল দিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৯
Share:

ভিড় বাজারে দিব্যি চলছিল বিকিকিনি। আচমকাই হইচই। এক কেপমার নিখুঁত কায়দায় কাজ সেরেও শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়তেই শুরু গণপিটুনি। ওই বাজারেই ছিলেন দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁরা ফোন করলেন ডিউটি অফিসারকে। ডিউটি অফিসার ফোন করলেন ওসিকে। ওসিকে ফোনে পাওয়া গেল না। ফোন গেল সিআইয়ের কাছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। পুলিশের আসতে সময় লাগে। ক্ষুব্ধ হন এলাকার লোকজন। জেলা জুড়ে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে।

Advertisement

জেলা পুলিশের দাবি, এ বার থেকে তেমন ঘটবে না। যে কোনও ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে তা জানতে পারবেন থানার ওসি থেকে শুরু করে জেলার পুলিশ সুপার ও সিআইডি-র কর্তারা। সৌজন্যে ‘টিএমএস’ বা ‘টাস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। মূলত রাজ্য পুলিশের অধীন সিভিক ভলান্টিয়ারদের গতিবিধি জানার জন্যই অ্যাপ চালু করা হয়েছে। ওই অ্যাপে সিভিক ভলান্টিয়াররা অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারবেন থানায়। থানার ওসি, আইসি থেকে শুরু করে এসপি, ডিআইজি এবং ডিজি পর্যন্ত পুলিশের বড়কর্তারা ওই তথ্য দেখতে পাবেন। সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাজিরার পাশাপাশি তাঁরা কী কাজ করছেন, তাও নথিভুক্ত থাকবে এই অ্যাপে। পুলিশের একাংশের দাবি, রাজ্য পুলিশের জন্য অ্যাপটি তৈরি করতে সাহায্য করেন সিআইডির প্রাক্তন সুপার ওয়াকার রেজা। বর্তমানে তিনি কলকাতা পুলিশের বন্দর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার।

নদিয়ার মোট ২৪টি থানায় প্রায় ৬২০০ সিভিক ভলান্টিয়ার আছেন। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা সামাল দিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, নদিয়ায় পুজোর আগে এটা শুরু হলেও এই অ্যাপের মূল উদ্দেশ্য চটজলদি যে কোনও ঘটনা, তথ্য ও ছবির আদানপ্রদান। ফোনের পাশাপাশি এত দিন কিছু থানার পুলিশকর্মীরা হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ করেও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন। তবে এই অ্যাপ তার থেকেও অনেক বেশি ‘স্মার্ট’। এই অ্যাপে সিভিক ভলিন্টিয়াররা প্রতি মুহূর্তে জানতে পারবেন, কোথায়, কখন কী দায়িত্ব তাঁদের পালন করতে হবে। আবার সিভিক ভলিন্টিয়াররাও কে কোথায় আছেন তা জানতে পারবেন পুলিশ কিংবা সিইআডি-র কর্তারাও। করিমপুর থানার ওসি তাপস ঘোষ জানান, করিমপুর থানায় মোট ১১৩ জন সিভিক ভলিন্টিয়ার আছেন। অ্যাপ চালুর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁদের সকলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “পুলিশ ও সিভিক ভলিন্টিয়ারদের কাজের সুবিধার জন্য এই অ্যাপ চালু করা হয়েছে। পুজোর আগে এই অ্যাপ চালু হওয়ায় এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে বেশ সুবিধা হবে। যে কোনও ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে জেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

এক সিভিক ভলান্টিয়ার বলছেন, ‘‘নামের পাশ থেকে ‘পুলিশ’ আগেই বাদ গিয়েছে। স্মার্টফোনের সৌজন্যে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে এখন একই অ্যাপে থাকছি, পুজোর আগে প্রাপ্তি বলতে এইটুকুই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন