সুনসান: সোমবার কুপিলায়।
রবিবার বিকেলে রানিনগরের সভায় ঐক্যের বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সোমবার সকালে নিজেদের মধ্যে বোমাবাজি শুরু করল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী।
ঘটনাটি ডোমকলের কুপিলা গ্রামে। স্থানীয়দের দাবি, রবিবার বিকেলে রানিনগরের সভায় সৌমিককে বলতে না দেওয়া নিয়ে প্রথমে বচসা এবং পরে তার জেরেই বোমার লড়াই। বোমার ঘায়ে জখম হয়েছে এক যুবক বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, তারাও গ্রামের মানুষের কাছে শুনেছে এক যুবক জখম হয়েছে, কিন্তু তার হদিশ মেলেনি। ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থলে যায় বড় পুলিশ বাহিনী। জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে বোমার লড়াই হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এক যুবক ওই ঘটনায় জখম বলেও জনতে পেরেছি আমরা। তবে তার এখনও খোঁজ মেলেনি। ওই এলাকায় পুলিশ টহল চলছে।’’
তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদ নতুন কোনও ঘটনা নয়, এর আগে জলঙ্গিতে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিংও করেছে একে অপরের বিরুদ্ধে। কিন্তু ডোমকলে একটা পক্ষ পুলিশের চাপে এত দিন মুখ খুলতে পারেনি বলে দলীয় সূত্রে খবর। ছাইয়ের আগুনের মতই চাপা ছিল তাদের ক্ষোভ। পুলিশের উপরে সৌমিকের লাগাম হালকা হতেই বিরোধী গোষ্ঠী মাঠে নেমেছে ডোমকলে। রবিবার ‘সৌমিক হটাও, ডোমকল বাঁচাও’ বলে মিছিলও করেছে ডোমকল তৃণমূলের একাংশ। আর তাতেই অক্সিজেন পেয়ে গ্রামে গ্রামে সৌমিক বিরোধী গোষ্ঠী মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এমনই একটি ঘটনা থেকে সোমবার সকালে বোমাবাজি কুপিলায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিনগরের সভা থেকে ফিরেই সৌমিক বিরোধীরা উল্লাস শুরু করে গ্রামে। আর তার পর থেকে শুরু হয় চায়ের দোকান থেকে মাচায় মাচায় চর্চা ও বিতর্ক। আর তা থেকেই সকালে শুরু হয় বোমাবাজি।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, ডোমকল পুরোপুরি বারুদের উপরে বসে আছে। যে কোনও সময়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ফলে আবারও ডোমকল পুরানো ডোমকলে ফিরতে পারে। পুলিশের কাছেও বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, তারা এখন খুব কড়া হাতে মোকাবেলা করতে গেলে কোন পক্ষের ঘাড়ে কোপ পড়ে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাদেরও।
যদিও এলাকার এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘বড় কর্তার নির্দেশ আছে, যে পক্ষের হোক গন্ডগোল ছড়ালে কেউ রেহাই পাবে না। পানি কেস ঝুলছে তার কপালে।’’ অন্য দিকে ডোমকলের পুর প্রধান সৌমিক হোসেন বলছেন, ‘‘যারা রবিবার রানিনগরের সভায় গন্ডগোল করেছে তারাই গ্রামে গিয়ে গন্ডগোল পাকাচ্ছে। আর এই চরিত্র থেকে পরিস্কার এরা সিপিএম ও কংগ্রেসের চর। এটাই তাদের পুরনো সংস্কৃতি। শান্ত ডোমকলকে ফের খুনের ডোমকল করতে চায় ওরা।’’