খেলার মাঠের গণ্ডগোলের জেরে আদিবাসী ছেলেদের মারধর করার অভিযোগে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হল তৌফিক রাজা ও সমরজিৎ পাঁধী। তৌফিক বিহার এবং সমরজিৎ ওড়িশার বাসিন্দা। দু’জনেই কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। বুধবার ধৃতদের কল্যাণী মহকুমার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন দেন। তাদের বিরুদ্ধে ৩২৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটা আমরা কেউই আশা করিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের বলব ওরা এখানে লেখাপড়া করতে এসেছে। সেটাই যেন মন দিয়ে করে। অন্য কোনও ঝামেলায় যেন না জড়ায়।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে মেডিক্যাল কলেজের কাছে একটি মাঠের একদিকে আদিবাসী ছেলেরা ফুটবল খেলছিল। উল্টো দিকে ক্রিকেট খেলছিল মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। মাঝে মাঝেই একের বল গড়িয়ে চলে যাচ্ছিল অপরের দিকে। তা নিয়ে দু’পক্ষের প্রথমে বচসা ও পরে হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় আদিবাসী তিন যুবককে উইকেট দিয়ে মারধোর করে মেডিকেল কলেজের পড়ুয়ারা। জখম সুরাই মুর্মু এবং লালমোহন মুর্মুকে কল্যাণী জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সময় মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন ছাত্র ওই দুই আদিবাসী যুবককে লক্ষ করে গালিগালাজ করে। এতেই উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর চাউর হতে কল্যাণী শহর ও তার আশপাশ লাগোয়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে যান। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। অভিযোগ, কেউ তাদের কথায় কান না দিলে, তাঁরা ছাত্রদের হোস্টেল লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। খবর পেয়ে জেলা ও মহকুমার পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফও। তাতেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। শেষে রাত আড়াইটে নাগাদ ওই দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জেলা পুলিশ সুপার অণর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’