বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা গাফিলতি, দলিল আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার বহরমপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়াও তাঁদের চিকিৎসা না করে আইসিডিএস কর্মীকে হাসপাতালে ফেলে রাখার অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস।
শুক্রবার হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফের আর এক রোগীর পরিবার অতিরিক্ত বিল নেওয়ার অভিযোগ করছে। ভগবানগোলার নারায়ণগঞ্জ রেল কলোনির আনোয়ারা পোদ্দার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকে সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
নবগ্রামের ইকরোলের বাসিন্দা ধানুবালা দুর্ঘটনায় জখম হয়ে বহরমপুরের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হন। সেখানে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা বিল হয়। অত টাকা দিতে না পারায় ছাড়া হয়নি ধানুবালাকে। পরে তাদের জমির দলিলও নিয়ে আটকে রাখা হয়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, বিষয়টি তিনি জেলাশাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপারকে লিখিত জানাবেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চাননতলার কারবালা রোড সংলগ্ন ওই হাসপাতালের ম্যানেজার (অপারেশনস) মোবারক হোসেন জানান, “আগেও বলেছি আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়।’’ তাঁর দাবি, ওই আইসিডিএস কর্মী ধানুবালা হাজরাকে আগেই ছুটি দেওয়া হয়েছিল। বিল মেটাতে পারেননি বলে পরিবারের লোক নিয়ে যাননি। দলিল আটকে রাখার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ধানুবালার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, জমির দলিল তাঁরা ফেরত পাননি। জেলাশাসক পি উলগানাথন জানান, এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের গাফিলতি নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ার পরে মাসকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতালে নজরদারি কড়া করার নির্দেশ দেন। তার পরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তেড়েফুড়ে কাজে নেমেছিল। তার পরে কাজ কতটা হচ্ছে?
গত কয়েক মাসে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট ১৯ টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, আগেই ১৭ টি অভিযোগের তদন্ত করে স্বাস্থ্যদফতর যে কমিশন গঠন করেছে সেখানে তার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। শেষ দুটি অভিযোগের তদন্ত করে তার রিপোর্ট স্বাস্থ্য কমিশনে পাঠানো হবে। মাস কয়েক আগে আচমকা জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন নার্সিংহোমে হানা দিয়েছিলেন নদিয়ার অতিরক্ত জেলাশাসক ও মহকুমা শাসক। নানান অনিয়ম চলছে এমন সাতটি নার্সিংহোমকে চিহ্নিত তাঁরা করেছিলেন।
রানাঘাটের একটি নার্সিংহোমকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। শেষ বার জেলা সফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই দু’মাসের জন্য সেই নার্সিংহোম বন্ধ করে দেয় জেলার স্বাস্থ্য দফতর। সেই নার্সিংহোমও খোলার অনুমতি পায়।