Kalyani AIIMS

এমসের নিয়োগ ‘চুরি’, পোস্টার অম্বিকার নামে

বিজেপির একাধিক সূত্রের দাবি, এই পোস্টার ঘিরে দলের অন্দরেও জলঘোলা শুরু হয়েছে। কেননা এমসে কাজ দেওয়া নিয়ে বিধায়কের উপর দলের একাংশ ক্ষুব্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গয়েশপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:১৭
Share:

সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

কল্যাণী এমসে তাঁরা চাকরি ‘চুরি’ করেছেন অভিযোগ করে পোস্টার পড়ল কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় ও তাঁর এক শ্যালিকার বিরুদ্ধে। বুধবার গয়েশপুর চেকপোস্ট এলাকায় শহরের দিকে যাওয়ার রাস্তার আশেপাশে সেই পোস্টার দেখা যায়, যাতে বিধায়ককে ‘বয়কট’ করার দাবি জানিয়েছে ‘কল্যাণী বিধানসভার অধিবাসীবৃন্দ’।

Advertisement

প্রত্যাশিত ভাবেই, বিজেপ্ নেতৃত্ব এর পিছনে তৃণমূলের হাত দেখছেন। তবে তা উড়িয়ে দিয়ে গয়েশপুর শহর তৃণমূল তথা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি কৌশিক ঘোষ দাবি করেন, “এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তবে অম্বিকা রায়ের শ্যালিকার কী ভাবে এমসে চাকরি হল, তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।” অম্বিকার পাল্টা দাবি, “এমসের একটি ঠিকাদার সংস্থায় নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে হয় না। জনপ্রতিনিধি হিসাবে ৮-১০ জনের জন্য সুপারিশ করেছি। তৃণমূলের একটা অংশ আমায় অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমার শ্যালিকা নিজের যোগ্যতাতেই কাজ পেয়েছেন।”

তবে বিজেপির একাধিক সূত্রের দাবি, এই পোস্টার ঘিরে দলের অন্দরেও জলঘোলা শুরু হয়েছে। কেননা এমসে কাজ দেওয়া নিয়ে বিধায়কের উপর দলের একাংশ ক্ষুব্ধ। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে যে কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরাই এমসের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থায় কাজ পাচ্ছেন না। বিধায়কের সুপারিশে অন্যেরা, এমনকি জেলার বাইরের লোকজন কাজ পাচ্ছেন। এমসে কাজ পাইয়ে দেওয়া নিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের সঙ্গেও অম্বিকার দ্বন্দ্ব চলছে। তার জেরেও এই পোস্টার পড়ে থাকতে পারে। তবে দীপার দাবি, “আমি কখনও নিয়মের বাইরে কাজ করি না। অম্বিকাদা জনপ্রতিনিধি। তাঁর বিরুদ্ধে কারা এই পোস্টার দিয়ে থাকতে পারে, সেটা মানুষ বুঝছে।”

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা এমসের নিয়োগ নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগে বিজেপি নেতাদের নাম কার্যত শুরু থেকেই জড়িয়েছে। সেই তালিকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকার, চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার সঙ্গে দীপা বিশ্বাসের নামও ছিল। মাস কয়েক আগেই গয়েশপুর শহরের বিজেপি নেত্রী তানিয়া ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে জগন্নাথের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন। দীপা-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তানিয়ার বিরুদ্ধে কল্যাণী আদালতে মানহানির মামলাও করেছেন জগন্নাথ।

‘বহিরাগত’ অম্বিকার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়া অবশ্য নতুন নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কল্যাণীর প্রার্থী হওয়ার পরেই দলের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়ে তখন পোস্টার পড়েছিল। সেই সময় থেকেই তিনি দলের একাংশের না-পসন্দ। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বিজেপির ঘরের কোন্দল তাদের বিপাকে ফেলতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। বিধায়ক অবশ্য গোষ্ঠী-কোন্দলের কথা স্বীকার করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন