তরুণী মৃত, ধৃত কনস্টেবল স্বামী

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সোমা (মহন্ত) সরকার (২৬)। তাঁর স্বামী পুলক সরকার কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল। তাঁদের বাড়ি নদিয়ার চাকদহ থানার সান্যালচর বাবলাতলা এলাকায়। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

শ্বশুরবাড়ি ফিরতে চাননি তিনি। কিন্তু বাপের বাড়িতে এসে তাঁর স্বামী অশান্তি করায় লোকলজ্জার ভয়ে ফিরতে হয়েছিল। মাঝরাতে সেখানেই মিলল তরুণীর ঝুলন্ত দেহ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সোমা (মহন্ত) সরকার (২৬)। তাঁর স্বামী পুলক সরকার কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল। তাঁদের বাড়ি নদিয়ার চাকদহ থানার সান্যালচর বাবলাতলা এলাকায়। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বশুরবাড়িতে নিগ্রহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পুলক, তাঁর মা শিবানী ও ভগ্নীপতি শঙ্কর বিশ্বাসকে সোমবার পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

সোমার বাপের বাড়ি চাকদহেরই মনসাপোতায়। তারা এক ভাই এবং এক বোন। তাঁর ভাই কাজের সুবাদে ইতালিতে থাকেন। সাড়ে চার বছর আগে চান্দুরিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাবলাতলার বাসিন্দা পুলকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের বছর তিনেকের একটি ছেলেও রয়েছে। তাঁর বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য সোমাকে চাপ দেওয়া হত। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে রাজি না হলে চলত নির্যাতন। বাধ্য হয়ে কয়েক বার সে বাপের বাড়িতে চলেও এসেছিল।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলেও স্বামীর ও ছেলের সঙ্গে সোমা মনসাপোতায় বাপের বাড়িতে এসেছিল। পরের দিন সকালেই তাঁর সঙ্গে গণ্ডগোল করে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে যান পুলক। কিন্তু বিকেলে তিনি ফিরে এসে স্ত্রী আর ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যেতে চান। সোমা শ্বশুরবাড়ি যেতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু বাপের বাড়ির লোকজনই তাঁকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে ফেরত পাঠান।

সোমার বাবা সুশান্ত মহন্তের কথায়, “মেয়ে শ্বশুরবাড়ি যেতে রাজি হচ্ছিল না। রাগে জামাই দরজায় লাথি মারছিল। এতে পাড়ায় আমাদের নাক কাটা যাচ্ছিল। আরও সম্মানহানির ভয়ে আমরা বাধ্য হয়ে মেয়েকে চলে যেতে বলি। ওরা ফিরে যাওয়ার পরে রাতে ফোন করে শুনি, মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ওরা ভাল আছে।’’

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাত দেড়টা নাগাদ সোমার শ্বশুরবাড়ি থেকে মনসাপোতায় ফোন আসে। জানানো হয়, তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সোমার বাবা বলেন, ‘‘ওখানে গিয়ে দেখি, পুলিশ মেয়ের দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, “আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। ওরা খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। ওদের শাস্তি চাই।”

এ দিনই কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে সোমার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশের মতে, এই ঘটনার পিছনে পুলক, শিবানী এবং হরিণঘাটা থানার বিরহীর বাসিন্দা শঙ্করের হাত ছিল। তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমার বাবার আক্ষেপ, ‘‘জামাই ধার নিয়ে বাড়ির কাজ করেছিল বল‌ে প্রতি মাসে আমি টাকা দিয়ে গিয়েছি। তবু ওরা মেয়েটাকে মেরে ফেলল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন