Coronavirus

লটারিতে এক কোটি পেলেন ইজারুল

গত কয়েক দিন আগে তিনি কেরালার রাজমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে করোনার আতঙ্কে জেরে বাড়ি ফিরেছেন। তার পর থেকেই অনিশ্চয়তা ঘুরপাক খাচ্ছিল তাঁর পরিবারে।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৬
Share:

ইজারুল (বাঁদিকে) ও তাঁর পরিজনরা নিজস্ব চিত্র

অখ্যাত গ্রাম যেন খবরের শিরোনামে এল। বেলডাঙার মির্জাপুরের শীতলপাড়া এলাকার মসজিদ পার করেই ইজারুল শেখের বাড়ি। তাঁর বাড়িতে শুক্রবার উৎসবের চেহারা নিয়েছে।

Advertisement

গত কয়েক দিন আগে তিনি কেরালার রাজমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে করোনার আতঙ্কে জেরে বাড়ি ফিরেছেন। তার পর থেকেই অনিশ্চয়তা ঘুরপাক খাচ্ছিল তাঁর পরিবারে। কিভাবে তাঁর পাঁচ জনের সংসার চলবে। রাজমিস্ত্রির কাজ নেই। কী খাবেন, জানেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর কাছে খবর আসে, একটি লটারির টিকিট কেটেছিলেন। তাতে এক কোটি টাকা পুরস্কার তিনিই পেয়েছেন। তখনই অনিশ্চয়তার মেঘ কেটে যায়। তারপর তার বাড়ি উৎসবের চেহারা নেয়।

তবে লটারির টিকিটে প্রথম পুরস্কার পেয়ে নিরাপত্তা জনিত সমস্যা অনুভব করেন ইজারুল। তিনি তাঁর লটারির খবর পুলিশকে জানান। পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানান। বেলডাঙা থানার পুলিশ এই সংবাদ পেয়ে লটারির টিকিট সমেত ইজারুলকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। শুক্রবার রাতে ইজারুল বেলডাঙা থানার পুলিশের হেফাজত থেকে বাড়ি ফেরেন।

Advertisement

মির্জাপুর শীতলপাড়ার আনারুল শেখের ছেলে ইজারুল। কেরালায় গিয়ে এলাকার কয়েক জনের সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ভোট বা পরবে বাড়ি আসেন। তা ছাড়া বাড়ি আসার অবসর মেলে না। কিন্তু অন্য রাজ্যের সঙ্গে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কেরালাকেও গ্রাস করেছে। সেখানে করোনাভাইরাসের কবলে পড়েছেন অনেকেই। তার পর থেকে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের কেরালা ছাড়তে হয়েছে বাধ্য হয়ে। কোনও রকমে ব্যাগ বেঁধে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরেছেন ইজারুল। কিন্তু বাড়ি ফিরেই দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছিল। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। সঙ্গে স্ত্রীকে কোনও রকমে চলছিল। তার মধ্যেই ইজারুল অন্যের দেখাদেখি লটারির একটি টিকিট কাটে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার পরে জানতে পারেন, তাঁর কাটা টিকিটে এক কোটি টাকার পুরস্কার মিলেছে। দুঃখ তখন আনন্দে বদলে যায়। টিকিটের খবর জানতে পেরে ইজারুল বলেন, “গত ২০ দিন মতো হল কেরালা থেকে করোনা আতঙ্কের জেরে কাজ ফেলে বাড়ি এসেছি। কবে ফিরব বুঝতে পারছি না। ফলে রুজি রোজগার শিকেয় উঠেছিল। তার মধ্যে লটারির একটা টিকিট কেটেছিলাম। তাতে পুরস্কার মিলবে, তা বুঝতে পারিনি। হাতে টাকা পেলে সংসারের দারিদ্র কিছুটা দূর হবে। খুব ভাল লাগছে।”

ইজারুলের স্ত্রী আনসুরা বিবি বলেন, “আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কেরলেই থাকেন। আমার সংসারে চরম দারিদ্র্য। এই লটারির টাকার খবর পেয়ে আমি খুব খুশি। আমার বাড়ি নেই। বাড়ি করতে হবে। তিন ছেলে মেয়েকে মানুষ করতে হবে। এই টাকা দিয়ে আমার স্বামী ব্যবসা করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন