Coronavirus

মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের খোঁজে হন্যে মুর্শিদাবাদ

সূত্রের খবর, এক মাস আগেও যে মাস্ক ১৫০ টাকায় বিক্রি হত, এখন তা ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০২:১৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পরামর্শ দিতেই হু হু করে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিক্রি হতে শুরু করেছে। অভিযোগ, ওষুধের দোকান থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামের দোকানে গিয়ে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার চাইতেই বলা হচ্ছে, নেই। হাতে গোনা যে দু’একটি দোকানে মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার পাওয়া যাচ্ছে তার দামও চড়া।

Advertisement

সূত্রের খবর, এক মাস আগেও যে মাস্ক ১৫০ টাকায় বিক্রি হত, এখন তা ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার মাস্ক ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও জানাচ্ছেন, বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার নেই। তাঁদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, ফলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

বহরমপুরের বাসিন্দা ইফতিকার আহমেদ বলেন, ‘‘এদিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের পাশের থাকা সব দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের খোঁজে গিয়েছিলাম, প্রত্যেকেই নেই বলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। একই ভাবে গোরাবাজার, খাগড়া ঘুরেও তা পাইনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছের এক দোকানি আগাম নেব বলে জানিয়ে এসেছি। বুধবার সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার আসার কথা।’’

Advertisement

এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের কালোবাজারি রুখতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের লালদিঘির পাড়ে এবং মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উল্টো দিকে একাধিক ওষুধের দোকান ও অস্ত্রোপচার সরঞ্জামের দোকানে ডিএসপি (সদরের) সুব্রত সরকার ও জেলা দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিক অমলেশ বালার নেতৃত্বে পুলিশ হানা দেয়। তাঁরা মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। কত মজুত রয়েছে, কত দামে বিক্রি হচ্ছে তার যেমন খোঁজ নিয়েছেন, তেমনই বেশি দামে যাতে এসব বিক্রি না হয় সে কথাও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘এদিন শহরের বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, মজুতদারি কালোবাজারি যেন না করা হয়। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের দাম যেন বেশি না নেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার কত মজুত রয়েছে, কী দামে বিক্রি হচ্ছে তার তথ্য সংগ্রহ চলছে। কালোবাজারি করলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বহরমপুরের ওয়াইএম মাঠের কাছে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম বিক্রির দোকানের এক কর্মী জানান, সোমবার ১০০ মিলিগ্রামের ৫০০টি হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ও প্রায় এক হাজার মাস্ক বিক্রি হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা ন্যায্য মূল্যে পাইকারি ও খুচরো বিক্রি করেছি। মঙ্গলবার মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার না থাকায় অনেক খরিদ্দার ফেরত গিয়েছেন।’’

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের কাছে একটি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামের দোকানের মালিক দেবাশিস দেবনাথ বলেন, ‘‘চাহিদা অনুযায়ী মাস্কের সরবরাহ নেই। এ ছাড়া আগের থেকে অনেক বেশি দামে আমাদের মাস্ক কিনতে হচ্ছে। আমরাও চাই সরকার পর্যাপ্ত মাস্ক হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার সরবরাহের ব্যবস্থা করুক।’’ সেখানকার এক ওষুধ দোকানের ম্যানেজার শুভজিৎ শর্মা বলেন, ‘‘আগে বিক্রি খুবই কম হত। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণে রুখতে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলতেই খরিদ্দার বেড়ে গিয়েছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় খরিদ্দারকে ফিরিয়ে দিচ্ছি।’’

মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার যে পর্যাপ্ত পাওয়া যাচ্ছে না তা এক স্বাস্থ্যকর্তার কথাতেও অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বা মাস্কের জোগান সত্যিই কম। ওই সব সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে আমরাই হিমশিম খাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন