প্রতীকী ছবি
প্লাস্টিকের অ্যাপ্রনের জায়গায় চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হয়েছে রেনকোট। কলকাতার কোনও একটি হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের এ রকম একটি ছবি কয়েক দিন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ক্যাপসানে কোথাও লেখা রয়েছে, ঢাল তরোয়াল ছাড়া যুদ্ধ করতে হচ্ছে স্বাস্থ্য কর্মীদের। এই অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও মাস্ক থেকে শুরু করে অ্যাপ্রন, চশমা, টুপি, জুতো, গাউনের মতো জিনিসপত্র পর্যাপ্ত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, এন ৯৫ মাস্ক তো পাওয়া যাচ্ছেই না। সাধারণ যে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে তা-ও পর্যাপ্ত নয়। ফলে একটি মাস্ক একাধিক দিন ব্যবহার করতে হচ্ছে।
এখনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস পজিটিভ কারও হয়নি ঠিকই, কিন্তু দেশজুড়ে যে ভাবে মহামারি ছড়াচ্ছে তাতে মুর্শিদাবাদে আসতে কত ক্ষণ। ইতিমধ্যে তিন জন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে তৈরি হওয়া আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের প্রত্যেকের করোনাভাইরাস নেগেটিভ ছিল।
আইএমএ-র বহরমপুর শাখার সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কথায় বলে অসাবধনতার মাসুল অনেক বড় হয়। ঢাল তরোয়াল ছাড়া নিধিরাম সর্দারের মতো ভয়ঙ্কর যুদ্ধে আমরা লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা মৃত্যু ভয় পাই না। কিন্তু পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) ছাড়া কাজ করাতো আত্মহত্যার সামিল।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পিভিসি প্লাস্টিক অ্যাপ্রন, মাথা ঢেকে রাখা টুপি, পলিপ্রপাইলিন সমৃদ্ধ জুতো, চশমার মতো জিনিসপত্র স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজন। কিন্তু সে সব মুর্শিদাবাদে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পর্যাপ্ত নয়। সূত্রের খবর শনিবার সুতির কাপড়ের তৈরি দুটি করে মাস্ক এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হয়েছে। সেখানকার এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘যে মাস্ক আমাদের দেওয়া হয়েছে, তাতে পরে আমরা সুরক্ষিত থাকব না। তার উপরে প্রতিদিন পরিষ্কার করে তা ব্যবহার করতে হবে।’’
মেডিক্যালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘শুধু আমাদের এখানে কেন, দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে চিকিৎসকরা একপ্রকার সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা চাই স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।’’
যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার দেবদাস সাহা অবশ্য বলেন, ‘‘পিপিই অমিল এটা ঠিক নয়। প্রয়োজন অনুযায়ী পিপিই আমাদের হাসপাতালে রয়েছে।’’
ওই হাসপাতালের এক অধ্যাপক চিকিৎসক কিন্তু বলেন, ‘‘পিপিই পর্যাপ্ত নেই। সুরক্ষা ছাড়াই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।’’