প্রতীকী ছবি।
যেখানে সর্বস্তরে জনসমাগমের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে, স্কুল-কলেজে ক্লাস বন্ধ, খেলার মাঠ দর্শকশূন্য, সেই সময়েও রাজনৈতিক দলগুলির কর্মসূচি কিন্তু চলছেই।
রবিবারই শান্তিপুরের ফুলিয়ায় একটি বেসরকারি লজে বিজেপির তরফে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের চারটি সাংগঠনিক জেলার পুরসভার নির্বাচনী কমিটির নেতাদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজিত হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, সেখানে শ’খানেকের বেশি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল। হাজির ছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ও।
পরে সংবাদমাধ্যমকে মুকুল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার একটি নির্দেশিকায় বলেছে, কোনও জায়গায় জনসমাগম না ঘটাতে। এ রাজ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শান্তিনিকেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টিও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।’’ রাজ্য সরকার কি এই অবস্থায় নির্বাচন পিছোনোর চেষ্টা করতে পারে? মুকুল বলেন, ‘‘নির্বাচন হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। এ কথা বলার মালিক আমরা নই।”
‘দায়িত্বশীল দল’ হিসেবে বিজেপি কী ভাবে এ দিনের কর্মশালায় দুই জেলার নেতাকর্মীদের জড়ো করল? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। তবে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার দাবি করেন, ‘‘কর্মীদের জন্য সুরক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল। খাওয়ার জায়গা এবং অন্যত্র জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়েছে।’’ শুধু বিজেপিই নয়, এ দিন জেলার একাধিক জায়গায় কর্মসূচি ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলেরও। বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় তাদের উদ্যোগে ‘স্বীকৃতি সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার শনিবার শাসক দলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে রানাঘাটে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। শনিবার তাদের একটি কর্মিসভাও হয়েছে নবদ্বীপে।
অর্থাৎ সাধারণ মানুষ যেখানে ভিড় এড়িয়ে চলছে, সেখানে যাদের সবচেয়ে বেশি দায়িত্ববোধ দেখানোর কথা সেই রাজনৈতিক দলগুলিই তার বিপরীত দিকে হাঁটছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে অবশ্য দাবি করেন, ‘‘অযথা আতঙ্কিত হওয়ার থেকে সচেতন এবং সতর্ক হওয়া জরুরি। আমরা মানুষকে সচেতন করছি, জমায়েতের ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহেরও দাবি, ‘‘বড় জমায়েত কিছু করছি না। যা-ও বা হচ্ছে, তা সতর্কতা বজায় রেখেই।’’ কী সেই সতর্কতা, তা যথেষ্ট কি না, সেটা অবশ্য সব নেতার বক্তব্যেই অস্পষ্ট।