Coronavirus in West Bengal

লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, ফের আক্রান্ত নার্স

স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায় প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের ঠিকমতো সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে তো?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুর্শিদাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৭:০০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

মুর্শিদাবাদে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিন ১০ জনের উপরে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ১০ মে পর্যন্ত যেখানে জেলায় মাত্র এক জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেখানে গত দু’মাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশো অতিক্রম করেছে। এক সময় আক্রান্তের সিংহভাগ ভিন্ রাজ্য ফেরত ছিলেন। এ বারে ভিন্ রাজ্য ফেরত আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে তাঁদের পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীরাও প্রায় প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন। ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা থেকে জেলার বাসিন্দারা। রবিবার রাতেও জেলার এগারো জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শমসেরগঞ্জের অনুপনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক নার্সও রয়েছে। এই নিয়ে ওই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ মোট ৬ জনের করোনা পজ়িটিভ হল। অন্যদিকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের ৩জন কর্মীর করোনার উপসর্গ থাকায় সোমবার তাঁদের বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘রবিবার রাতে ১১জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায় প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের ঠিকমতো সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে তো? মুর্শিদাবাদের একটি গ্রামীণ হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম পাওয়া যাচ্ছে না। এন ৯৫ মাস্কের পর্যাপ্ত জোগান নেই। সার্জিক্যাল মাস্কে কাজ চালাতে হচ্ছে। তাঁর দাবি, ‘‘নন কোভিড হাসপাতালে সব ধরনের রোগী আসছে। ফলে করোনা আক্রান্ত হলেও বোঝার উপায় থাকে না। তাই স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য মুখবেষ্টণী, গ্লাভস, এন ৯৫ মাস্কের প্রয়োজন। কিন্তু এন ৯৫ মাস্কের জায়গায় সার্জিক্যাল মাস্ক দিয়ে চালাতে হচ্ছে। ফলে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।’’

যদিও মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘সরাসরি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি বেশি। তবে তাঁদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কে, কোন জায়গা, কী ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম পরবেন তার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা রয়েছে। সেই নির্দেশিকা মেনে প্রত্যেককে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জামও দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে শমসেরগঞ্জ ব্লক ও ধুলিয়ান পুরসভা এলাকায় মোট পাঁচজনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন অনুপনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্স রয়েছে। লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের মতো ওই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ বাড়িয়েছে। শুধু ওই হাসপাতাল নয়, এর আগে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের এক নার্স-সহ তিন জন, সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক কর্মী, লালবাগ মহকুমা হাসাপাতালের তিনজন নার্স ও তিনজন আয়া, একজন সাফাই কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক সহকারি অধ্যাপক, তিন জন আয়ার করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। বহরমপুরে একটি বেসরকারি ল্যাবেরেটরির ৬ জন কর্মী, বহরমপুর স্টেশন লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাবে প্রায় প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন