coronavirus

টিকার জন্য শবরীর প্রতীক্ষা

জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, রাজ্য থেকে যে টিকা পাঠানো হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৬:১৭
Share:

টিকার প্রবল আকালের জন্য ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার কাজ জেলায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল। মঙ্গলবার জেলার ৪২টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সবই দ্বিতীয় ডোজ।

Advertisement

ঠিক হয়েছে, আপাতত সাধারণের জন্য প্রথম ডোজ বন্ধ। একমাত্র ‘হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার’ ও ‘ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার’দের প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। বাকিদের জন্য আপাতত দ্বিতীয় ডোজ চালু থাকবে। জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, রাজ্য থেকে যে টিকা পাঠানো হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। তাই সবাইকে টিকা দেওয়া যাচ্ছে না।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার’দের মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২২ শতাংশ ও ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার’দের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ কর্মী টিকা নেননি। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে একাধিক বার তাঁদের টিকা নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ভয় বা অন্য বিভিন্ন কারণে তাঁরা টিকা নেননি। যেহেতু করোনা মোকাবিলায় তাঁরা একেবারে সামনে থেকে কাজটা করছেন তাই তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সেই কারণে তাঁদের টিকা নেওয়ার আরও একবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই মত সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে আবারও নোটিস পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

বেশ কিছু দিন ধরেই টিকার অভাবে জেলায় একের পর এক টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কর্তারা প্রতিদিন রাতে ‘স্টক’ দেখে নিয়ে পরদিন ক’টি কেন্দ্রে থেকে কত টিকা দেওয়া সম্ভব হবে তা ঠিক করছেন। জেলার কর্তারা বলছেন, “অতি সামান্য টিকা আসছে। এত দিন খুব হিসাব করে আমরা সেই টিকা কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না।”

জেলার এক কর্তার কথায়, “রবিবার রাতে নতুন নির্দেশিকা এসেছে। তা মেনেই আমরা দ্বিতীয় ডোজের উপরে বেশি গুরুত্ব দিয়ে প্রথম ডোজ বন্ধ করেছি।” রানাঘাট মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “প্রথম ডোজ নেওয়ার ৪২ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা। হাতে কত টিকা আছে তার উপরে নির্ভর করেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।”

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জেলার জনসংখ্যার নিরিখে প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষকে টিকা দিতে হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩ লক্ষ ৮২ হাজার মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন মাত্র ১ লক্ষ ১০ হাজার ১১৮ জন। এখনও ২ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৮২ জনের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিৎ করতে হবে। অথচ টিকা নেই বললেই চলে। শনিবার মাত্র ২০ হাজার ডোজ টিকা পাঠিয়েছে রাজ্য। রবিবার কোথাও টিকা দেওয়া হয়নি। সপ্তাহখানেক আগে রাজ্য থেকে মাত্র ১৪ হাজার ডোজ টিকা পাঠানো হয়েছিল।

মঙ্গলবার জেলার হাতে কোভিশিল্ড আছে ১৯ হাজার ৬৬০ ডোজ আর কোভ্যাকসিন আছে ৬ হাজার ১৩০ ডোজ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, “টিকার সঙ্কটের জন্য আমরা আপাতত সাধারণের জন্য প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রাখছি। পর্যাপ্ত টিকা না-আসা পর্যন্ত শুধু মাত্র দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।” নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন