COVID-19

করোনায় মৃত সামান্য কম, সৎকারে গতি

পুলিশি পাহারায় মৃতদেহ মর্গে নিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা হচ্ছে।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৫:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত এক সপ্তাহে তুলনায় কিছুটা হলেও মৃত্যুর হার কমেছে নদিয়ায়, সেই সঙ্গে কমেছে শনাক্ত হওয়া সংক্রমণও। তবে তাতে আদৌ নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কারণ গত দু’তিন দিনে মৃত্যুর হার ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের প্রথম দিকে জেলায় মৃত্যুর হার অনেকটাই লাফিয়ে বেড়েছিল। গত ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত ৬২ জন মারা যান, দৈনিক গড়ে প্রায় ৯ জন। এর মধ্যে শেষ তিন দিনে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। ১১ মে কেউ মারাই যাননি। আবার ১২ থেকে ১৮ মে, এই সাত দিনে মৃত্যুর সংখ্যা নেমে এসেছে ৩৬-এ, দৈনিক গড় পাঁচ জনের সামান্য বেশি। দৃশ্যতই দ্বিতীয় সাত দিনে মৃত্যু কমেছে। কিন্ত এই সপ্তাহে শেষ তিন দিনে মারা গিয়েছেন ২৪ জন। অর্থাৎ সংখ্যাটা ফের বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গত সাত দিনে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যাও চারশোর গণ্ডি টপকে ফের নীচে নেমে এসেছে। তার কারণ শেষের দিকে রোগী ভর্তির হার কমে আসা। অন্য দিকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার হারও আগের চেয়ে বেড়েছে। কিছুটা কমেছে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার সংখ্যাও। কিন্তু নেহাতই কয়েক দিনের সামন্য কমতিতে আদৌ ভরসা করতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। বরং যে কোনও সময় ছবিটা ফের উল্টে যেতে পারে, এই আশঙ্কাই প্রবল।

Advertisement

তবে নিঃসন্দেহে ষেটা কমেছে, তা হল করোনায় মৃতের দেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়ি বা হাসপাতালে পড়ে থাকা। তার প্রধান কারণ অবশ্যই ব্লক ও পুর এলাকাগুলিতে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা, যাঁরা মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। গোড়ার দিকে জেলায় মৃত্যুর হার যখন লাফিয়ে বাড়ছিল, অনেক জায়গায় মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার ঘটনা ঘটেছে। কোথাও গাড়ির সমস্যা, কোথাও বা কী ভাবে কে দেহ নিয়ে যাবেন সেই যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। তার পরেই নোডাল অফিসার নিয়োগ হয়েছে। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্লক এবং পুরসভা এলাকায় গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন পুরসভা, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

সাধারনত বিধি মেনে গভীর রাতে বিভিন্ন শ্মশানে করোনায় মৃতের দেহ দাহ করা হয়। তার আগে তা জেলা হাসপাতাল বা মহকুমা হাসপাতালের মত বিভিন্ন জায়গায় মর্গে থাকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখন ব্লক বা পুর এলাকায় করোনায় কারও মৃত্যু হলে তা সংশ্লিষ্ট নোডাল অফিসারকে জানানো হচ্ছে। তিনিই দরকার মত ব্যবস্থা করছেন। হাসপাতালে মৃত্যু হলেও তাঁদের কাছে খবর যাচ্ছে। পুলিশি পাহারায় মৃতদেহ মর্গে নিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রেও কোভিড বিধি মেনে কাজ করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন।

তবে সব সময়ে সবই যে মসৃণ চলছে তা নয়। মঙ্গলবারই করোনা আক্রান্ত এক মহিলাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। সেখানে তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দেহটি বেশ কয়েক ঘণ্টা জরুরি বিভাগের সামনে পড়ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, মৃত্যুর শংসাপত্র এবং অন্য জরুরি কাগজপত্র তৈরির জন্য সময় লেগেছে। সে সব মেটার পরে দেহ সৎকারের জন্য পাঠানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement