Coronavirus

লকডাউনে লগ্নি অনিশ্চিত চাষে-আবাদে

ছোট মাপের কারবার করা মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে গৃহবন্দি থাকার ফলে ভেবে কুল পাচ্ছেন না তাঁদের পুরনো পেশা আর লাভজনক হবে কি না। সেই অনিশ্চয়তার তালিকায় প্রথম দিকেই আছে আবাদি মানুষ।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৫৩
Share:

প্রলম্বিত লকডাউনের ধাক্কাটা সামাল দিতে গিয়ে পুরনো পেশা থেকে মন উঠে গিয়েছে অনেকের। তাঁদের প্রশ্ন— অবস্থা স্বাভাবিক হলে পুরনো বাজার ফিরে পাব তো!

Advertisement

মৃত্যুগন্ধী করোনাভাইরাসের ছায়ায় এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে। তাই পিছু হটছেন ছোট ব্যবসায়ী থেকে ক্ষুদ্র চাষি, সকলেই। ছোট মাপের কারবার করা মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে গৃহবন্দি থাকার ফলে ভেবে কুল পাচ্ছেন না তাঁদের পুরনো পেশা আর লাভজনক হবে কি না। সেই অনিশ্চয়তার তালিকায় প্রথম দিকেই আছে আবাদি মানুষ।

সামান্য জমি, পুঁজিও সামান্য, সেই সঞ্চিত টাকা ব্যবসা কিংবা চাষবাসে লগ্নি না করে অসময়ের জন্য তুলে রাখাই শ্রেয় মনে করছেন অধিকাংশ। লকডাউনের এই বাজারে তাই চাষে উৎসাহ হারাচ্ছেন আবাদি মানুষ। তাঁদের অনেকেরই দাবি, হাতে জমানো টাকাটা চাষে ব্যবহার করলে তা যে দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। তাঁদেরই এক জন ডোমকলের ফজলুল হক বলছেন, ‘‘লকডাউন না উঠলে উত্তরোত্তর জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। সঞ্চিত টাকা আবাদে খরচ করলে তার যথার্থ মূল্য যে পাব, তারও ঠিক নেই। তাই বীজ না কিনে টাকাটা জমিয়ে রাখছি।’’

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে কৃষি দফতরের কর্তারা। তাঁদের দাবি, এমন হলে বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান কমবে। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রসাশন) তাপস কুন্ডু বলছেন, ‘‘উৎসাহ হারানোর মতো কোনও কারণ নেই, লকডাউন এর মধ্যেও চাষবাস নিয়ে যা যা দরকার তার সবটাই খোলা আছে। সরকারও পাশে আছে। তবু ছোট চাষিদের ধন্দ কাটছে না।’’

সারগাছি ধান্য কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের অভিজ্ঞ কৃষিবিজ্ঞানী সুজন বিশ্বাস বলছেন, ‘‘আমরা দিন কয়েক ধরেই বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলছি। যেটা সব চেয়ে আশঙ্কাজনক তা হচ্ছে, চাষির হাতে যে টাকাটা আছে সেটা চাষে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না তাঁরা। এর প্রধান কারণ, চাষিরা ভাবছেন লকডাউনের মধ্যে হাতে টাকা না থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।’’

ডোমকলের চাষি বাবর আলির দাবি, ‘‘বছর বছর বিঘাখানেক জমিতে লালশাক চাষ করি আমি। কিন্তু এ বার কাঠা দুয়েকেই ইতি টেনেছি। কারণ সরকার, কৃষি দফতর যাই বলুক, বাস্তব অন্য কথা বলছে। বাইরে আনাজ যাওয়ায় একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের এলাকার ক্ষেত্রে। নিজের খাওয়া এবং এলাকার হাটে বাজারে কিছুটা বিক্রি করার জন্যই ওই চাষ করেছি।’’ জেলার এক কৃষি অধিকর্তা বলছেন, ‘‘পাটের ক্ষেত্রে প্রভাবটা খুব বেশি পড়েনি। কিন্তু বিশেষ করে সব্জি চাষে কম উৎসাহের ব্যাপারটি আমরাও লক্ষ্য করছি। চাষিদের তাই নানাভাবে আমরা উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন