Coronavirus

ওষুধ মিলবে তো? চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

লকডাউনেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসাবে সর্বত্র ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তচাপ, সুগার, হার্ট, স্নায়ুরোগের মত বিভিন্ন সমস্যার ওষুধ এখনো পাওয়া যাচ্ছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার ও সম্রাট চন্দ

কৃষ্ণনগর ও শান্তিপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৪:১৩
Share:

চিকিৎসার জন্য। কৃষ্ণনগরে সোমবার। নিজস্ব চিত্র

চাহিদা আছে, কিন্তু টান পড়ছে জোগানে। এখনও ওষুধ নিয়ে হাহাকার শুরু না-হলেও দ্রুত সরবরাহে গতি না-এলে অদূর ভবিষ্যতে বড় সমস্যা হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

Advertisement

লকডাউনেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসাবে সর্বত্র ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তচাপ, সুগার, হার্ট, স্নায়ুরোগের মত বিভিন্ন সমস্যার ওষুধ এখনো পাওয়া যাচ্ছে। তবে জেলায় ওষুধের দোকানের মালিকদের একটা বড় অংশ জানাচ্ছেন, আগের তুলনায় সরবরাহ বেশ কম। করোনা পরিস্থিতিতে ভিটামিন-সি খাওয়া ভাল বলে অনেক চিকিৎসক জানিয়েছেন। তার জেরে ভিটামিন- সি ট্যাবলেটের চাহিদা তৈরি হয়েছে। সেটাও এখন প্রায় অমিল।

ফুলিয়ার এক ওষুধ ব্যবসায়ী বিপ্লব দেবনাথ যেমন বলছেন, ‘‘ যা স্টক রয়েছে তা দিয়ে এখনও বেশ কিছু দিন চলে যাবে। তবে যতটা প্রয়োজন ততটা ওষুধ পাচ্ছি না।” লকডাউন ঘোষণার পরে অনেকেই যতটা সম্ভব ওষুধ কিনে বাড়িতে রেখেছেন, বিশেষত যাঁদের বাড়ি কোনও অসুস্থ ব্যক্তি রয়েছেন। হজমের ওষুধ, পেট খারাপের ওষুধ অনেকেই বেশি করে বাড়িতে কিনে রেখেছেন। সেটা যাঁদের পক্ষে সম্ভব হয়নি তাঁরা এখন আশঙ্কায় ভুগছেন।

Advertisement

এক ওষুধ ব্যবসায়ী যেমন বলেন, ‘‘চিকিৎসক কাউকে এক মাসের ওষুধ খাওয়ার কথা বললে তিনি হয়তো ওষুধের তিন ভাগে কিনতেন। কিন্তু এই সময়ে তাঁরা অনেকেই একবারে পুরোটা কিনে নিয়েছেন।’’ ফুলিয়া এলাকার এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের এখানে কোনও ওষুধ না পেলে আমাদের যেতে হয় রানাঘাটে। লকডাউনের সেখানে যেতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’

রাস্তায় বেরোচ্ছেন না মেডিক্যালল রিপ্রেজেন্টেটিভেরা। তাঁরা ওষুধ সংস্থার সঙ্গে বিক্রেতাদের যোগসূত্রের কাজ করতেন। সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার লকডাউনের কারণে অনেক ডিস্ট্রিবিউটারের অফিসে ও অনেক ওষুধের দোকানে কর্মীদের সকলে হয়তো পৌঁছতে পারছেন না। রানাঘাটের এক ডিস্ট্রিবিউটর বাবু ধর বলেন, ‘‘ওষুধের সরবরাহ কম হচ্ছে। এবং অনেক জায়গাতেই লোকের অভাবে সরবরাহে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।’’ আবার রানাঘাটের এক সাব-ডিস্ট্রিবিউটর শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরবরাহ তো কমই। আবার ওষুধ বিক্রেতাদের কাছে পাঠাতে যে ব্যবস্থা করতে হয়, জিনিসপত্রের অভাবে সেটা করতেও ভুগতে হচ্ছে।”

বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নদিয়া জেলার সহ-সভাপতি গুপীনাথ দে অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘একটা সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। তবে কিছু কোম্পানি ওষুধ পাঠাতে শুরু করেছে সোমবার থেকে। তাতে অনেকটাই সমস্যার সমাধান হচ্ছে। আশা করছি আর কোনও অভাব হবে না।” যদিও জেলার ১৭টি ওষুধ সংস্থার স্টকিস্ট ও ১২টি ওষুধের দোকানের মালিক অংশুমান দে বলছেন, “জনতার কারফিউয়ের আগের দিন ওষুধ কিছুটা সরবরাহ হয়েছিল। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত ওষুধ আসেনি। ফলে স্টক কমতে কমতে খুব কঠিন অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ওষুধ চাইলেও পাঠাতে পারছি না। ওষুধ সংস্থাগুলি যানবাহন ও যাতায়াতের সমস্যা কথা বলছে।তার উপর কাজ করার লোক বা শ্রমিক নেই। তবে একটাই আশার কথা যে, কিছু সংস্থা জানিয়েছ তারা যানবাহনের ব্যবস্থা করে ওষুধ পাঠাবে।’’

সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধের সরবরাহ ঠিকঠাকই রয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সরকারি ক্ষেত্রে আগেই প্রায় অমিল মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মতো জিনিস। তবে অন্যান্য ওষুধের ক্ষেত্রে এখনও সে ভাবে আকাল তৈরি হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন