Lockdown

‘চার-ছয় নয়, খুচরো রান’ 

সীমান্তের মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্তা। সারা দেশে লকডাউন চলছে। কেউ বাইরে বেরোলেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছে কেন বেরোলেন!

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস 

ডোমকল শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৯
Share:

ছবি পিটিআই।

দাদা কি ব্যাটিং করছেন? ফোনের ও প্রান্ত থেকে উত্তর এল, ‘‘করছি বটে, তবে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতে আমি নেই, দাঁতে দাঁত চেপে ডিফেন্স করছি, খুব প্রয়োজন হলে পয়েন্ট, গালিতে ঠেলে খুচরো রান নিচ্ছি।’’

Advertisement

সীমান্তের মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্তা। সারা দেশে লকডাউন চলছে। কেউ বাইরে বেরোলেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছে কেন বেরোলেন! কেউ বাড়াবাড়ি করলে লাঠি হাতে দৌড়তে হচ্ছে। অনেক জায়গাতেই লাঠি পেটা চলছে। তাকেই ‘ব্যাটিং’ বলছেন এলাকার মানুষ। কিন্তু ওই পুলিশকর্তার কথাতেই, ‘‘ডোমকলের মতো জায়গায় শুধু বাবা বাছা বলে হবে না, তাই এখানে ব্যাটিংয়ের সময় ডিফেন্সের পাশাপাশি একটু ঠেলে দেওয়া পুশ করা সঙ্গে দু-একটা কভার ড্রাইভও দিতে হচ্ছে।’’

নির্বাচনের সময় কেউ মারা গেলে এলাকার লোকজনই বলতেন ‘উইকেট পড়ল’। কিন্তু এ বার লকডাউনকে ঘিরে পুলিশের এমন ঝোড়ো ব্যাটিং একেবারেই অচেনা। বেয়াড়া জনতাকে ঘরে ঢোকাতে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছিল পুলিশ। প্রথমে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি পাশাপাশি কভার ড্রাইভ করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পেয়েই বৃহস্পতিবার থেকে ব্যাট চালানোর ধরন বদলেছে পুলিশ। কিছু কিছু এলাকায় ছাড় দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা সত্যিই জরুরি। তার পর থেকে এখন আর বলে বলে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি নেই। তবে এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘এলাকা অনুযায়ী ব্যবস্থা! ডোমকলে বাবা-বাছা চলে না। ফলে প্রথম দিকে একটু ঝোড়ো ব্যাটিং না করলে হত না।’’

Advertisement

এলাকার অনেক বাসিন্দাও বলছেন, ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ফূর্তির মেজাজেই চলছিলেন। কেউ মোটরবাইক হাঁকাচ্ছেন, কেউ আড্ডা বসাচ্ছেন। যেন লম্বা ছুটির পরিবেশ। তখন পুলিশ যদি হাত খুলে ব্যাটিং না করত, তা হলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো যেত না।

ডোমকলের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইকবালের দাবি, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকরা মোটরবাইকে দাপিয়ে বেড়িয়েছে গোটা এলাকা। পুলিশ ব্যাটিং শুরু করতেই ছবিটা বদলে গিয়েছে।’’

পুলি‌শ অবশ্য বেশ সাবধানী। এক কর্তা বলেন, ‘‘স্টাম্পে বল না থাকলে ব্যাট তুলছি না।’’ যদিও এলাকার এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ কাজে বেরিয়েও পুলিশের লাঠি খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কোনও কিছু না জানতে চেয়ে এই বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে, তাদের। তাই আমরা চাইছি পুলিশ ব্যাটিং করুক, তবে সাবধানে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন