কাটমানি-চাপানউতোর,কে কার দিকে তোলে আঙুল!

দলীয় নেতা-কর্মীদের তোলাবাজি কিংবা কাটমানি নেওয়া রুখতে সতর্ক করেছিলেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়। দলের ভোটকুশলী টিম পিকে’ও এ ব্যাপারে সাবধান করেছিল দলীয় নেতাদের। দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে শুরু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

অভিযোগটা উঠেছিল যাঁর দিকে, দলীয় নির্দেশে পুর-প্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল তাঁকে।

Advertisement

তাঁর এত দিনের সহযোগী পুর কাউন্সিলরেরা প্রায় কোমর বেঁধে জানিয়ে দিয়েছিলেন— এ দুর্নীতি সইবেন না তাঁরা!

সেই পুর-বিদ্রোহের সামনের সারিতে ছিলেন যিনি কাটমানি নেওয়ার তির এ বার তাঁর দিকেই ঘুরে গেল। ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ এবং সেই সূত্রে কাটমানি নেওয়ার জন্য হাসপাতালে এসে রীতিমতো হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ডোমকল পুরসভার উপ-প্রধান প্রদীপ চাকি। তৃণমূলের এক শীর্য জেলা নেতাও মেনে নিচ্ছেন, ‘‘খবরটা আমাদের কানেও এসেছে। প্রদীপের বিরুদ্ধে তোলাবাজি নেওয়ার অভিযোগ উঠছে।’’

Advertisement

দলীয় নেতা-কর্মীদের তোলাবাজি কিংবা কাটমানি নেওয়া রুখতে সতর্ক করেছিলেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়। দলের ভোটকুশলী টিম পিকে’ও এ ব্যাপারে সাবধান করেছিল দলীয় নেতাদের। দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে শুরু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। কিন্তু সে সবে যে তুলসী পাতা ভেজেনি, বিভিন্ন জেলার আনাচকানাচ থেকে কাটমানি নেওয়ার অহরহ অভিযোগেই তা স্পষ্ট! ডোমকল মহুকুমা হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে সুপারের দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন প্রদীপ চাকি। তাঁর দাবি, ‘‘হাসপাতালের সুপার প্রবীর মান্ডি মোটা টাকা নিয়ে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করছেন।’’ শুধু অভিযোগ নয়, ‘প্রতিবাদ’ জানাতে সদলে হাসপাতালে গিয়ে সুপার এবং হাসপাতালের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়েছেন প্রদীপ। শুক্রবার সন্ধ্যার সেই ঘটনায় সুমন বিশ্বাস নামে এক অস্থায়ী কর্মী আহত হয়ে স্থানীয় থানায় প্রদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন। কিন্তু প্রবীরবাবু পাল্টা বলছেন, ‘‘অভিযোগ ঢাকতে তো অভিযোগই করতে হয়! হয়ত সে জন্যই আমার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ। খোঁজ নিয়ে দেখুন কাটমানি কে নিচ্ছেন! মনে রাখবেন, কর্মী-নিয়োগের প্রক্রিয়া সরাসরি স্বাস্থ্যভবন থেকে হয়।’’

ডোমকলের এক দাপুটে তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দলের জেলা পর্যবেক্ষকের কাছে আমরা অভিযোগ করেছি, সুপার না দলের কোনও নেতা— কাটমানি ঠিক কে নিচ্ছেন, তদন্ত করে দেখা হোক!’’ যা শুনে হাসছেন অপসারিত পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন। মাস কয়েক আগে, এমনই নানান ‘দুনীর্তির’ অভিযোগ উড়ে এসেছিল তাঁর দিকে। সেই তালিকার উপর দিকেই ছিল কাটমানি। হাসপাতালে অস্থানীয় কর্মী নিয়োগ নিয়ে জটিলতা সেই সময় থেকেই। সৌমিক বলছেন, ‘‘আমি এখনও ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। কিন্তু এ সব অভিযোগ নিয়ে আর মাথা ঘামাই না। আমায় বিনা কারণে অনেক শুনতে হল, এ বার তো অভিযোগ তাঁদের দিকেই ঘুরে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন