বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
অন্য রাজ্যের ভোটে দলের বিপর্যয় নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বুথ স্তরে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, এই উপায়েই তৃণমূলকে টক্কর দেওয়া যাবে।
গত শনিবার ধুবুলিয়ায় জনসভার আগে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি, তিন জন সাধারণ সম্পাদক ও জেলার পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেন দিলীপ। বিজেপি সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিপর্যয়ের ধাক্কায় মুষড়ে পড়া দলীয় কর্মীদের ফের চাঙ্গা করে দীর্ঘস্থায়ী সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে তিনি বেশ কিছু নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। তার অন্যতম হল সাংগঠনিক কাজে গতি আনা। এ ব্যাপারে কোনও রকম সমঝোতা করা হবে না এবং প্রয়োজনে নেতৃত্বে বদল আনা হবে বলেও কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে গিয়েছেন তিনি।
বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “দিলীপদা বারবার বলছিলেন, আমরা কৃষ্ণনগর লোকসভা আসন জেতার জায়গায় আছি। তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিতে দ্রুত প্রতিটি বুথে কমিটি তৈরি করতে হবে। শক্তিশালী করতে হবে বুথ স্তরের সংগঠনকে।”
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপি প্রতিটি বুথে কমিটি তৈরির কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এখনও তা পুরোপুরি করে উঠতে পারেনি। জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলায় এখনও প্রায় ৩০ শতাংশ বুথে কমিটি গড়া যায়নি। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে বাকি সব বুথে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন রাজ্য সভাপতি। এই বুথ কমিটিগুলি ন্যূনতম ২০ জনকে নিয়ে তৈরি করতে হবে। এই সব বুথ কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল তুলে ধরা হবে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এই রাজ্যে নারী নির্যাতন ও সামগ্রিক প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিক তুলে ধরতেও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি।
দিলীপের নিদান: জেলা নেতাদের বুথ স্তরে নেমে সংগঠন তৈরির কাজ করতে হবে। প্রতিটি জেলা কমিটির সদস্য ও পদাধিকারিকে নিজের বুথের দায়িত্ব তো নিতেই হবে, সেই সঙ্গে পাশের বুথের দায়িত্বও নিতে হবে। প্রতিটি জেলা ও মণ্ডল নেতাকে মাসে অন্তত চার দিন ‘প্রবাস যাপন’ করতে হবে, অর্থাৎ অন্য কোনও মণ্ডলের কোনও বুথে গিয়ে সারা দিন সংগঠনের কাজ করে রাতে সেখানেই কোনও কর্মীর বাড়িতে থাকতে হবে। উদ্দেশ্য, সেই গ্রামের দলীয় কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা।
জেলা কমিটির এক নেতার কথায়, “দিলীপদা বারবার করে এই প্রবাস কর্মসূচির উপরে জোর দিয়েছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে যে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কোনও শিথিলতা ও গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে গতিহীন নেতৃত্বকে সরিয়ে সর্বক্ষণ সংগঠনের কাজ করতে পারবে এমন লোককে নেতৃত্বে তুলে আনা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।” সেই মত জেলা কমিটিতে আবারও পরিবর্তন হতে পারে বলে বিজেপির একটি সূ্ত্রের দাবি।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার অবশ্য বলেন, “সাংগঠনিক বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করব না। এটুকু বলতে পারি, রাজ্য সভাপতি যা নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তা দ্রুত বাস্তবায়িত করা হবে।”