প্রতীকী ছবি
ভরপেট খাবার পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনটাই অভিযোগ তুললেন বহরমপুর মাতৃসদনের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীরা। এই মুহূর্তে প্রায় ৫০ জন মতো রোগী ভর্তি রয়েছেন সেখানে। রোগীদের অভিযোগ, সকাল বিকেলে চা, বিস্কুট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সকালের টিফিন কমিয়ে প্রায় অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিকেলের টিফিন। দুপুরে আলু, পেঁপে, কুমড়ো দিয়ে তরকারি, ডাল, মাছের সঙ্গে ভাত দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরিমাণ অত্যন্ত কম। তবে রাতের খাবার কম হলেও কোনও সমস্যা হচ্ছে না ।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাতৃসদনের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি আছেন ভগবানগোলার আখেরিগঞ্জের টুটুল হক। তাঁর অভিযোগ, সকাল-বিকেলের চা বিস্কুট বন্ধ। বেলা ১০ টা নাগাদ দেওয়া হত ২টি কলা, ৪ পিস পাউরুটি ও একটি ডিম। তার সঙ্গে দুধ। সে জায়গায় দেওয়া হচ্ছে ১টি কলা, ১ পিস পাউরুটি ও ১টি ডিম, দুধ বন্ধ। আড়াইটে নাগাদ দেওয়া হচ্ছে দুপুরের খাবার। খাবার বলতে তরকারি, ডাল, মাছ ও ভাত। রান্না মুখে তোলা যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘খিদের জ্বালায় তাই খাচ্ছি। কিন্তু ভাত যা দিচ্ছে তাতে বেশির ভাগেরই পেট ভরছে না।’’ মুড়ির টিফিনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ধুলিয়ানের পবন প্রামাণিক বলছেন, “বেলা আড়াইটেয় আধপেট ভাত খেয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত কিছু না খেয়ে থাকা যায়? ক’দিন আগেও সমস্যা ছিল না। ভরপেট খাবারই পাচ্ছিল সবাই। হঠাৎ খাবার কমে গেল কেন সেটাই বুঝতে পারছি না।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্তবাবু বলেন, “কোভিড হাসপাতালে এতদিন যে খাবার দেওয়া হচ্ছিল, সেটা দিচ্ছিলাম আমরা নিজের মত মেনু চার্ট বানিয়ে। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশ নামা দিয়েছে। যা দু’চারদিন থেকে কার্যকর করা হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, কোভিড হাসপাতালের রোগীদের জন্য তিন বার খাবার দেওয়া হবে। কী, কী মেনু এবং কতটা পরিমাণে দেওয়া হবে তাও বলে দেওয়া হয়েছে। সেটাই মেনে চলা হচ্ছে।” তিনি বলেন, “তবে বাস্তব ঘটনা হল কোভিড আক্রান্ত হয়ে যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। তাদের যা কায়িক পরিশ্রম তাতে খাবারের পরিমানটা একটু বেশি দরকার তাদের জন্য। আমি বলেছিলাম একাধিক মেনুর জায়গায় একটা মেনুর সঙ্গে ভাতের পরিমাণ একটু বেশি রাখা দরকার। সেই কারণেই সমস্যাটা হচ্ছে। আমি নিজেই মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে নিয়ে কোভিড হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসব খাবারের সমস্যা। কথা বলব রোগীদের সঙ্গে। অবশ্যই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
করোনা সংক্রমণের সংখ্যায় যেন কোনও কমতি নেই । বৃহস্পতি ও শনিবার কড়া লকডাউনের মধ্যেও শনিবারও জেলায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য মতো জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। মুর্শিদাবাদ জেলায় এ পর্যন্ত করোনা পজিটিভের সংখ্যা ৫৭১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪১৯ জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য মত শনিবার শমসেরগঞ্জে কেউ আক্রান্ত হননি। কিন্তু বাস্তবে শমসেরগঞ্জের দু’জন এদিন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায় যাদের পরীক্ষা হয়েছে অন্য জেলায়। ফলে এই দুজনকে নিয়ে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে এদিন শমসেরগঞ্জের স্বাস্থ্য কর্তাদের।