Doctor

চেম্বারে ঢুকে গুলি গ্রামীণ চিকিৎসককে

আল-আমিনকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৮
Share:

নিহত গ্রামীণ চিকিৎসক আল-আমিন শেখ।

একেবারে ফিল্মি কায়দায় দুটি মোটর বাইকে মুখ ঢাকা ছ’জন যুবক, যাদের সকলের হাতেই ধরা রয়েছে পিস্তল। মোটরবাইক থেকে নেমে পিস্তল উঁচিয়ে চেম্বারের মধ্যে ঢুকে চেয়ারে বসে থাকা গ্রামীণ চিকিৎসক আল-আমিন শেখকে (৩৫) গুলি করে দ্রুত বেরিয়ে যায়। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ডোমকলের পারদিয়াড় গ্রামে। আল-আমিনের বাড়িও ওই গ্রামে। ঘটনার পরে আল-আমিনকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘নদিয়ার এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিকভাবে তদন্তে পুলিশ জেনেছে। স্থানীয় একটি দোকানের সিসিক্যামেরা থেকে কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত দোষীরা ধরা পড়বে।’’ ঘটনার তদন্তে জেলা পুলিশের একটি দল নদিয়ার থানারপাড়া এলাকায় রওনা দিয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

শীতের সকালে তখনও নিশ্চুপ গ্রামের প্রাণকেন্দ্র পাড়দিয়াড় ক্লাব মোড়। ঘন্টা খানেক আগেই সেখানে ছোট্ট চেম্বারে এসে বসেছেন এলাকার পরিচিত গ্রামীণ চিকিৎসক আল-আমিন শেখ। আচমকা এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ দুটো মোটরবাইকে করে ৬ জন এসে নামে। সকলের মুখ মাফলারে ঢাকা। দু’জন মোড়ের মাথায় পিস্তল উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর বাকি চার জন রওনা দেয় ১০ মিটার দূরে আলামিনের চেম্বারের উদ্দেশে। সেখানে এক মহিলা রোগীকে সরিয়ে দিয়েই শুরু করে একের পর এক গুলি। মোট চারটি গুলি লাগে ওই চিকিৎসকের শরীরে। গুলি চালনার শব্দ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসার চেষ্টা করলে দুষ্কৃতীরা তাঁদের লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। ফলে ছত্রভঙ্গ হয় জনতা। এর পরেই পাশের গ্রাম গরীবপুর হয়ে নদিয়ার দিকে রওনা দেয় ওই দুটি মোটরবাইক।

দুষ্কৃতীদের চেনা না গেলেও মোড়ের এক দোকানে লাগানো সিসিক্যামেরায় দুষ্কৃতীদের একটি মোটরবাইকের নম্বরপ্লেট দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগেও একবার আল-আমিনকে সবক শেখাতে দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এলাকার একটি মাঠে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় এ বার নিকেশ করে দেওয়া হল বলে পুলিশের অনুমান।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার থানারপাড়ার এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন আল-আমিন শেখ। তার জেরেই এই খুন বলে দাবি পুলিশের। যদিও আল আমিনের পরিবার এই খুন নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। বাবা মুসা কলিম শেখ বলছেন, ‘‘কেন ছেলেকে এ ভাবে খুন করা হল আমরাও বুঝতে পারছি না। তার সঙ্গে কারও তেমন শত্রুতাও নেই, পুলিশ তদন্ত করলেই গোটা ঘটনার সামনে আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন