বানের আগে কেরল থেকে চলে এসেছিলেন ইদের জন্য। পরবের দিন পরিবারের সকলের সঙ্গে আনন্দে কাটান তিনি। কোনও রকম অস্বাভাবিকতা ছিল না দম্পতির আচরণে। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে গলা টিপে স্ত্রীকে খুন করার পরে নিজেও আত্মহত্যা করায় অবাক পরিবারের সদস্য থেকে পড়শি সকলেই। কী এমন ঘটল? বুঝে উঠতে পারছেন না কেউই। তবে সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে ডোমকলের আলিনগর গ্রামে শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
এ দিন দুপুরে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে পড়শিদের সন্দেহ হয়। তখন তাঁরা বাইরে থেকে জানালায় উঁকি দিয়ে দেখতে পান একই দড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে সাবিরুল ইসলাম (২৮) ও সাবিনা বিবি (২৫) ঝুলছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলছেন, ‘‘গলা টিপে খুনের পরে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয় স্ত্রীকে। পরে ওই একই দড়িতে নিজের গলায় ফাঁস দিয়ে ওই যুবক আত্মহত্যা করে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তবে কী কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রাজমিস্ত্রী সাবিরুল কেরলে কাজ করতেন। ইদের জন্য কুড়ি দিন আগে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। পড়শিরা জানান, বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েকে নিয়ে খুশিতেই ছিল। আচরণে কোনও অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। তবে বাড়ি ফিরের আসার কিছু দিন স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে বিবাদ বাধে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ঝামেলা তো সব পরিবারে হয়ে থাকে বলে আত্মীয়-পরিজন বা পড়শিরা কেউই গুরুত্ব দেয়নি। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার দুই সন্তানকে জলঙ্গিতে বাবার বাড়িতে রেখে আসেন সাবিনা। রাতে স্বামী-স্ত্রী বাড়িতেই ছিলেন। এ দিন সকালে এক ভিক্ষাজীবী বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়া না ফিরে যাওয়ায় সন্দেহ হয় পড়শিদের। তখন তাঁরা জানলায় উঁকি দিয়ে দেখেন গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ওই দম্পতিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে।
পুলিশের এক কর্তা জানান, ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে সংসারের আর্থিক সুরাহা হলেও দিনের পর দিন ভিন রাজ্যে কাটানোর ফলে স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্কের মধ্যে টানাপড়েন তৈরি হচ্ছে। তার জেরে গত দু’মাসে ডোমকল মহকুমা এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।