গিয়েছিলাম গরমের হাত থেকে পালিয়ে খানিক ঘুরে আসতে। তা হল কই? বরং গোলামালের জেরে ঘোরা মাথায় উঠল!
বোন আর বোনপোকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার ভোরে শিলিগুড়ি পৌঁছে যাই। কিন্তু সেখান থেকে দার্জিলিং যাওয়ার অভিজ্ঞতা সুখকর হল না। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে এসেছেন। ফলে রাস্তায় যানজট। গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এক দিকে সময় নষ্ট, অন্য দিকে ড্রাইভার বেশি ভাড়া চাইছেন।
তা-ও বা যা গিয়ে পৌঁছনো গেল, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পরিস্থিতি যা দাঁড়াল, তা আর কহতব্য নয়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থকদের বিক্ষোভ আর পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের জেরে যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায় দার্জিলিং। ভাগ্য ভাল, তার আগেই আমরা শহর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম।
আমরা উঠেছিলাম ম্যালের একটি হোটেলে। বুধবার বিকেলে সেখান থেকে বেরিয়ে মার্কেটের কাছে দেখি, মোর্চা সভা করছে। দেখে মনে হচ্ছিল, আবহাওয়া তেতে উঠছে। পরের দিন গণ্ডগোল শুরু হওয়ার আগেই আমরা মিরিকের দিকে রওনা দিই। মিরিক যাওয়ার জন্য বিজনবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি তো করছিই, বাস পেলাম না। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে আড়াই হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করে মিরিকের পথে রওনা দিই। মাঝপথে ড্রাইভারের কাছেই শুনলাম গোলমালের খবর। তিনি আমাদের মাঝপথে ছেড়ে ম্যালের দিকে ফিরে গেলেন। শেষ পর্যন্ত অন্য একটি গাড়ি করে আমরা মিরিক পৌঁছই।
সে দিনই আমাদের দার্জিলিং ফিরে আসার কথা। কিছু জায়গায় ঘোরার কথাও ছিল। কিন্তু সে দিন ফেরার সাহস পাইনি। কার্শিয়াংয়ের কাছে একটি গ্রামে এক পরিচিতের রিসর্টে গিয়ে ঠাঁই নিই। শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ আমাদের শিলিগুড়ি ফেরার কথা। কিন্তু বন্ধে গাড়ি কোথায়? বিকেলে অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হতে গাড়ি পেলাম। অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে সন্ধ্যায় নামলাম শিলিগুড়ি। বাস ধরে ফিরছি কৃষ্ণনগর।
শিক্ষিকা, কৃষ্ণনগর