চালকের বুদ্ধির জোরে বাঁচল নজরুলপল্লি

শুক্রবার সকালে সিন্থেটিক তুলো বোঝাই একটি লরিতে আচমকা আগুন ধরে যায়। বেগতিক দেখে চালক বেলডাঙা শহরের পাঁচরাহা মোড় সংলগ্ন নজরুল পল্লি বার করে কোনও রকমে লরিটিকে নিয়ে গিয়ে এলাকার পুকুরের মধ্যে ফেলে দিলেন এবং উল্টো দিকের দরজা দিয়ে চালক লাফ দিয়ে কোনও রকমে বেরিয়ে আসেন। এতে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন নজরুল পল্লির বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২১
Share:

আগুন লেগে ভস্মীভূত তুলোর ট্রাকটি। বেলডাঙায়। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক

লরি চালকের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেল বেলডাঙার নজরুলপল্লির বাসিন্দারা।

Advertisement

শুক্রবার সকালে সিন্থেটিক তুলো বোঝাই একটি লরিতে আচমকা আগুন ধরে যায়। বেগতিক দেখে চালক বেলডাঙা শহরের পাঁচরাহা মোড় সংলগ্ন নজরুল পল্লি বার করে কোনও রকমে লরিটিকে নিয়ে গিয়ে এলাকার পুকুরের মধ্যে ফেলে দিলেন এবং উল্টো দিকের দরজা দিয়ে চালক লাফ দিয়ে কোনও রকমে বেরিয়ে আসেন। এতে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন নজরুল পল্লির বাসিন্দারা।

এ দিন ঘড়ির কাঁটায় তখনও ১২টা বাজেনি। কড়া রোদে ঝলসে যাচ্ছে চোখ। বইছে প্রথম ফাগুনের এলোমেলো বাতাস। এমন সময়ে বেলডাঙা শহরের পাঁচরাহা মোড় লাগোয়া নজরুল পল্লির দিকে এগিয়ে লরি এগিয়ে চলেছে। লরি থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। লরির পিছনে ছুটছে অগণিত জনতা আর লরির উপর থেকে আগুনে পোড়া সিন্থেটিক তুলো রাস্তায় পড়তে পড়তে যাচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে প্লাস্টিকের গাদা। পাশে মোটর বাইকের সারি। জ্বলন্ত লরিটা কেন ছুটছে সেটা তখনও আঁচ করতে পারেনি উপস্থিত মানুষ। কয়েকশো মিটার পেরিয়ে লরিটি রাস্তার ডান পাশের পুকুরে ফেলে দিলেন গাড়ির চালক। তিনি গাড়ির কাগজ নিয়ে লাফ দিলেন উল্টো দিকে। বাঁচলো নজরুল পল্লি।

Advertisement

নজরুল পল্লির সংকীর্ণ রাস্তা। তার বাম পাশে একটা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার রয়েছে। সেই ট্রান্সফর্মারের ঝুলন্ত বিদ্যুতের তার থেকেই আগুন ধরে যায় লরিতে বলে জানা গিয়েছে। লরির চালক প্রথমে টের পাননি। পরে এলাকার মানুষের চিৎকারে গাড়ির চালক আগুন লাগার কথা জানতে পারেন। তার পরই তিনি দ্রুত গতিতে চালিয়ে রাস্তার ধারের একটি পুকুরের জলে লরি ডুবিয়ে দিতে বাধ্য হন। গাড়িটি পুকুরে পড়ে গেলেও গাড়ির স্টার্ট তখনও বন্ধ হয়নি। লরির চাকাগুলো আগুনের তাপে ফাটতে শুরু করে। গাড়ির তেলের ট্যাঙ্কের তেলেও আগুন ধরে যায়। রাস্তার দু’দিকের ছড়িয়ে থাকা তুলো দীর্ঘক্ষণ জ্বলতে থাকে। এলাকায় পুলিশ পৌঁছায়। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনও দমকম পৌঁছায়নি। প্রায় এক ঘন্টা পর বহরমপুর থেকে দমকলের ইঞ্জিন বেলডাঙা পৌঁছায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল হক বলেন, ‘‘রাস্তায় দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সেই অবস্থায় জলন্ত লরি ছুটছে। চালক লরি পুকুরের জলে ডুবিয়ে না দিলে এলাকায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’ শবনম বিবি বলেন, ‘‘আমাদের প্লাস্টিকের নানা জিনিষের ব্যবসা। তাই প্লাস্টিক ছড়িয়ে ছিল। যদি লরি পুকুরে না ফেলত তবে সব কিছু জ্বলে যেত।’’

তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লরিরক চালকের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। লরিটি সম্পূর্ন পুড়ে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন