শোক: বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র
ঘণ্টা তিনেকের ব্যবধানে এক দম্পতির দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সঞ্জয় সরকার (৫৫) ও কৌশল্যা সরকার (৪৫) নামে ওই দম্পতি বহরমপুরের মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের কাশিমবাজার শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার গভীর রাতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কৌশল্যাকে কুপিয়ে খুন করে বাড়ি থেকে পালান সঞ্জয়। রবিবার সকালে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন সঞ্জয়ও। কাশিমবাজার স্টেশনের দ্বিতীয় রেলগেটের দিকে ব্যাসপুরের কাছে রেল লাইন থেকে পুলিশ তাঁর দেহ উদ্ধার করে।
বহরমপুরের আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন সঞ্জয়। এই নিয়ে বছর খানেক ধরে তাঁদের দাম্পত্য কলহ চলছে। মাঝে-মধ্যেই তুমুল অশান্তি হত। শনিবার রাত দুটো নাগাদ স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করার পরে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান। পরে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন। ওই ঘটনায় বহরমপুর থানায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। অন্য দিকে বহরমপুর জিআরপি থানার ওসি জ্যোতির্ময় সরকার জানান, সঞ্জয়ের পকেট থেকে একটি নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে অশালীন কথা ছাড়া কিছুই লেখা নেই। ওই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় মুদি সঞ্জয় সরকার পাড়ায় সকলের পরিচিত। ওই দম্পতির বছর দুয়েক আগে মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং মেয়ে বর্তমানে পঞ্জাবে থাকেন। ছেলে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে বিদ্যুৎ দফতরে কাজ করেন। শনিবার নাইট ডিউটি থাকায় তিনি অফিসে ছিলেন। পরে খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন কৌশল্যা।
সঞ্জয়ের এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘গত ছ’মাস ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চরম আকার নেয়। মাঝে-মধ্যে আমরা গিয়ে অশান্তি থামাতাম। কিন্তু তাই বলে দাদা যে এত বড় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলবে, ভাবতে পারিনি।’’
পড়শি সুদীপ্ত তালুকদার জানান, শনিবার রাত দুটো নাগাদ কৌশল্যাদেবীর ঘরে চিৎকার শুনে লোকজন গিয়ে দেখেন সঞ্জয় বাড়ি ছাড়া। বিছানায় তাঁর স্ত্রীর দেহ পড়ে রয়েছে। তাঁর খোঁজে এলাকায় তল্লাশিও চালানো হয়। কিন্তু তাঁকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। ওই রাতেই বহরমপুর থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সকালে কাশিমবাজার স্টেশনের কাছে সঞ্জয়ের দেহ মেলে।
কৌশল্যার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রীর এই অশান্তির কথা আমরা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি। আগে জানতে পারলে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতাম।’’