সিগারেটে সাবধান! অভিযান জেলা জুড়ে

সুখটানেও জুটতে পারে দুঃখ। হোটেল বা রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে সবে সিগারেটটা ধরিয়েছেন, ঠিক তখনই কেউ এসে বলতেই পারেন, ‘‘এখানে কেন!’’ ‘‘না, মানে, ইয়ে, আসলে...’’ বলেও রেহাই নেই। জরিমানার সঙ্গে জুটতে পারে নানা বিধিসম্মত সতর্কীকরণও। অতএব, ধোঁয়াপ্রেমীরা সাবধান!সুখটানেও জুটতে পারে দুঃখ। হোটেল বা রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে সবে সিগারেটটা ধরিয়েছেন, ঠিক তখনই কেউ এসে বলতেই পারেন, ‘‘এখানে কেন!’’ ‘‘না, মানে, ইয়ে, আসলে...’’ বলেও রেহাই নেই। জরিমানার সঙ্গে জুটতে পারে নানা বিধিসম্মত সতর্কীকরণও। অতএব, ধোঁয়াপ্রেমীরা সাবধান!

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০২:০২
Share:

প্রকাশ্যে ধূমপান নয়!

Advertisement

কথাটি চেনা। এমন বিজ্ঞপ্তিও দেখা যায় বহু জায়গায়। কোথাও লেখা থাকে— ধূমপান নিষেধ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাও ঢাকা পড়ে যায় বিড়ি কিংবা সিগারেটের ধোঁয়ায়।

এ বারে এই চেনা কথাটা যে স্রেফ কথার কথা নয় তা বোঝাতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। গত বছর মে মাসে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ‘পাবলিক প্লেস’-এ বা জনপরিসরে ধূমপানের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল। সে বার বহরমপুর শহরের কোর্ট বাজার থেকে শুরু করে সমবায়িকা মোড়, প্রাঙ্গণ মার্কেট, বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালিয়ে প্রকাশ্যে ধূমপায়ীদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করেছিল।

Advertisement

এ বারে জেলা সদর ছাড়িয়ে ব্লক এলাকায় প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে অভিযানে নামল পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে জেলার ৬টি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রকাশ্যে ধূমপায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলার প্রতিটি থানা এলাকায় মাসে অন্ততপক্ষে এ রকম দু’টি অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার।

বহরমপুরে অভিযানের পরে ফের অভিযান শুরু করতে প্রায় ১০ মাস সময় লাগল কেন?

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত বছর আইনের প্রয়োগ করতে গিয়ে পাবলিক প্লেস ও ওপেন প্লেসের ব্যখা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। তাই আইনের সব দিক দেখে, আলোচনা করে যাঁরা আইন প্রয়োগ করবেন তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, প্রচার করা— এ সবের জন্য সময় লেগেছে। এ বারের অভিযানে কোথাও কোনও বিতর্ক থাকবে না।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালের সিগারেট ও অন্য তামাকজাত দ্রব্য-রোধ আইনে ‘পাবলিক প্লেস’ অর্থাৎ জনপরিসরে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনপরিসর বলতে কোন এলাকা বোঝানো হচ্ছে?

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও জায়গা যেখানে জনতার যাতায়াত আছে, যেমন প্রেক্ষাগৃহ, হাসপাতাল ভবন, রেলের প্রতীক্ষালয়, বিনোদন কেন্দ্র, রেস্তরাঁ, অফিস-কাছারি, আদালত ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গ্রন্থাগার এবং হোটেল ও রেস্তরাঁর লাগোয়া-সহ বেশ কিছু স্থানকে জনপরিসর বলা যেতে পারে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘জনপরিসরে ধূমপান করলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায়ের সংস্থান আছে এই আইনে।’’

এ বছরের শুরুতে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে ‘নো স্মোকিং’ জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল রীতিমতো নির্দেশিকা জারি করে বলেছেন, ‘‘জেলা পরিষদ চত্বরে ধূমপান করলেই জরিমানা করা হবে।’’ তবে ধূমপায়ীদের জন্য জেলা পরিষদ চত্বরে ‘স্মোকিং জোনও’ করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) জানাচ্ছেন, নির্দেশ জারি করার পাশাপাশি সকলকে সচেতন করা হয়েছে। চলছে কড়া নজরদারিও। নির্দেশিকা অমান্য করে ধূমপান করার বিষয়টি এখনও অবশ্য নজরে আসেনি।

মাস দু’য়েক আগে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জেলার থানাগুলিকে ধূমপানের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ, মাসে অন্ততপক্ষে দু’দিন করে অভিযান চালাতে হবে। অভিযানের আগে এলাকায় এ বিষয়ে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রচারের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর অর্থও পাঠিয়েছে। অভিযানও চলছে জোরকদমে।

এখন তাই ছাই নয়, ধোঁয়া দেখলেই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে সরেজমিনে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন