পরনে নীল শাড়ি। হাতে হলুদ কার্ড। কার্ডে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লোগো। এক ঝলক দেখলেই মনে হবে, স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন গ্রামে এসেছেন। শাড়ি পড়া ওই মহিলারা একে একে খোঁজ নিচ্ছেন বাড়ির লোকজনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে। তারা জানায়, হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে লাগবে ১০ টাকা। আর টিকা নেওয়ার সময় দিতে হবে আরও ১০০ টাকা। আর এতেই সন্দেহ দানা বাঁধে লোকজনের মনে। সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা তো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মেলে। লোকজন ‘রোজ ফ্লিম অ্যাকাডেমি’-র ওই সদস্যদের আটকে রেখে খবর দেন প্রশাসনকে। তারপরেই পর্দা ফাঁস হয়ে গেল জালিয়াতির। সোমবার দুপুরে ডোমকলের কুপিলা গ্রামের ঘটনা।
সপ্তাহ খানেক আগে গ্রামের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেরিয়েছিল মাইক বাঁধা গাড়ি। ছোট গাড়ির পিছনের সিটে বসে লাগাতার ঘোষণা হচ্ছিল, ‘‘আপনাদের দুয়ারে নীল শাড়ি পরা স্বাস্থ্যকর্মীরা আসবেন। ১০ টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে হলুদ কার্ড সংগ্রহ করুন।’’ সেই মতো সোমবার জনাদশেক মহিলা কুপিলায় আসেন। গ্রামের কয়েকশো বাড়ি ঘুরে ঘুরে তাঁরা ১০ টাকা করে আদায়ও করেন। কিন্তু মালিথ্যা পাড়ায় গিয়ে গোল বাঁধে। পাড়ার কিছু লোকজন তাঁদের ঘিরে ধরেন। স্বাস্থ্য দফতরের পরিচয় আছে কিনা, জানতে চান। প্রথমে ওই মহিলারা বেশ নথি দেখান। চাপে পরে স্বীকার করে, তাঁদের কাছে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও অনুমতিপত্র নেই। ফিরিয়ে দিতে চায় টাকাও। গ্রামের বাসিন্দা কাশিম মালিথ্যার কথায়, ‘‘১০ টাকা নিতে দেখেই সন্দেহ হয়। ব্লকের স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগ করা হয়। ওরা জানায়, দফতরের কেউ গ্রামে যাননি। তার পর আমরা তাদের ঘিরে ধরি। পরে টাকা ফেরত দিয়ে কেটে পড়ে ওরা।’’ ডোমকলের এসিএমওএইচ শুভরঞ্জন চন্দ বলেন, ‘‘দফতরের কেউ এ দিন কুপিলায় যাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ সংস্থার কর্তা বাদশা হোসেন বলেন, ‘‘এমনটা করা যায় না সেটা আমার জানা ছিল না।’’