Death

সুকুমার ‘শব্দশহিদ’, আর্জি রাজ্যের কাছে

সুকুমারের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকার পাঁচ জনের বিরুদ্ধে নাকাশিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।

Advertisement

সন্দীপ পাল

নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১২
Share:

মৃত সুকুমারের স্ত্রী ও ছেলে। নাকাশিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

দশমীর রাতে মোবাইল থেকে মাইক বাজানো নিয়ে দুই পক্ষের বচসা ও মারামারি জেরে মৃত্যু হয়েছিল সুকুমার সাঁতারার। তাঁকে শব্দশহিদ ঘোষণা করে পরিবারটিকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে আর্জি জানিয়েছে ‘পরিবেশ আকাদেমি‌’ নামে একটি সংস্থা।

Advertisement

সুকুমারের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকার পাঁচ জনের বিরুদ্ধে নাকাশিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ সঞ্জিত সাঁতরা নামে এক জনকে ওই রাতেই গ্রেফতার করে। পরে আরও দুই অভিযুক্ত রাজু সাঁতরা ও গোষ্ঠ সাঁতারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে। বাকি দুই অভিযুক্ত পলাতক।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিলকুমারী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আরবেতাই হিন্দু পাড়া যুব সঙ্ঘ দুর্গাপুজো কমিটির প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে সুকুমারের ভাই ষষ্ঠীর মোবাইল থেকে বক্সে গান বাজছিল। হঠাৎ ওই গান বন্ধ হয়ে গেলে ষষ্ঠী গিয়ে দেখেন, তাঁর মোবাইলে বেপাত্তা। তিনি দাবি করেন, মোবাইল ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত গান বাজবে না। পরে এই নিয়ে বচসা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে‌‌ দুই পক্ষ। পুজো কমিটির সদস্যেরা তা থামিয়েও দেন।

Advertisement

তবে পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত পাঁচ জন সুকুমারকে তাঁর বাড়ির সামনে একা পেয়ে মারধর করে। সুকুমারের স্ত্রী মিতা বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। আহত সুকুমারকে বেথুয়াডহরি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। ওই গ্রামে আগেও পুজোয় অশান্তির ইতিহাস আছে। শুক্রবার পুজো কমিটির সম্পাদক অরুণ মণ্ডল বলেন, “মোবাইল নিয়ে বচসা বাধার সময়ে আমরা সকলে ছাড়িয়ে দিয়েছিলাম। পরে ওরা সুকুমারের বাড়ির সামনে ওকে মারধর করে বলে শুনেছি‌।।” দিনমজুর সুকুমারের বছর ছয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল। বছর পাঁচেকের একটি ছেলে আছে। এখন সংসার কী ভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন পরিবারের লোকজন। সুকমারেরা তিন ভাই সকলকেই দিনমজুর। বাড়ির সামনে বসে তাঁর স্ত্রী মিতা বলেন, “আমার সামনেই ওরা ওকে মারধর করে। আমি আটকাতে গেলে চড়থাপ্পড় মেরে ছিটকে ফেলে দেয়। এখন ছেলেকে কী ভাবে মানুষ করব, জানি না।”

এ দিন অভিযুক্তদের বাড়িকে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক বাড়িতেই তালা ঝুলছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জেনেছেন যে মোবাইল ফোন নিয়েই বচসা বেধেছিল। পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন