মশলা চাষে সময় ও শ্রম দুই-ই কম, আবার তাতে বাড়তি দু’পয়সা ঢুকছে ঘরে

ধনে-জিরে ফলিয়ে লাভ করছেন চাষি

চেনা চাষে কেবলই লোকসান! প্রধান অর্থকরী ফসলের তকমা গায়ে ঝোলানো থাকলেও পাট চাষ এখন লটারির মতো। কোন বছর চাষি ফসলের দাম পাবেন, আর কোন বছরে পাবেন না তা কেউ জানে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৫
Share:

চমক: চিরাচরিত চাষ ছেড়ে জমিতে ফলল ধনে। নিজস্ব চিত্র

চেনা চাষে কেবলই লোকসান! প্রধান অর্থকরী ফসলের তকমা গায়ে ঝোলানো থাকলেও পাট চাষ এখন লটারির মতো। কোন বছর চাষি ফসলের দাম পাবেন, আর কোন বছরে পাবেন না তা কেউ জানে না। শুধু পাট কেন, অনিশ্চয়তার ছবিটা ধান, আলু, পিঁয়াজ, ডাল শস্য থেকে শুরু করে মরশুমি সব্জি সব ক্ষেত্রে একই রকম। জমি, বাড়ির দলিল কিংবা স্ত্রীর সোনা বন্ধক দিয়ে চাষ করে লাভের বদলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মরশুম শেষ করা প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে জেলার কৃষকদের।

Advertisement

ঋণে জর্জরিত কৃষক আলু বা ধানের বদলে মশলা চাষে পেয়েছেন বিকল্প পথ। নদিয়া, সংলগ্ন বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মশলার চাষ। প্রধানত কালো জিরে এবং ধনের চাষেই লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা।

করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর, নাকাশিপাড়া থেকে নবদ্বীপ, শান্তিপুর, রানাঘাট, চাকদহ, হাঁসখালির কয়েকশো হেক্টর জমিতে চাষিরা প্রথাগত ফসলের বদলে মশলা চাষ করছেন। নদিয়া সংলগ্ন বর্ধমানের শুধু পূর্বস্থলী ব্লকেই প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে মশলা চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বর্ধমানের সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ।

Advertisement

সামান্য দুই থেকে তিন হাজার টাকা বিঘা প্রতি ব্যয় করে চাষি কালো জিরে চাষে পাঁচ থেকে দশ গুণ টাকা ফেরত পেতে পারেন। মশলা চাষে যুক্ত পাটুলির লক্ষ্মণ দাসের কথায়, ‘‘মশলার চাষ চিরাচরিত ধান আলু পাটের তুলনায় অনেক লাভজনক। অর্থ এবং শ্রম—কোনওটাই তেমন লাগে না। এক বিঘা জমিতে কালো জিরে চাষ করতে ১৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা বড়জোর খরচ। এক বিঘা জমিতে গড়ে দুই কুইন্ট্যাল ফসল ফলে। আশি থেকে নব্বই দিনের মধ্যে ফসল উঠে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই চাষির পক্ষে অত্যন্ত লাভজনক এই চাষ।’’

অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় বাড়ছে মশলা চাষ। কান্দি মহকুমার খড়গ্রাম ব্লকের ঝিল্লি ও পদমকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতে আদা চাষ হয় প্রায় আট হেক্টর জমিতে। হলুদ চাষ হয় প্রায় চার হেক্টর জমিতে। একই ভাবে কান্দি, বড়ঞা, ভরতপুর ১ ও ২ ব্লকেও আদা ও হলুদ চাষ দিন দিন বাড়ছে বলেও দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন